কলকাতা, 3 মে: সম্পত্তি ও পারিবারিক অশান্তির জেরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে ছেলে। প্রায় 70 বছর বয়সি বৃদ্ধা তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ জীবনের শেষ কটাদিন যেন মৃত স্বামীর ভিটেতেই কাটাতে পারেন, সেই আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা মা। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পুলিশকে অবিলম্বে সক্রিয় হয়ে ব্যাবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
সুত্রের খরব, রিক্তা দত্ত সোনারপুর থানার মিলনপল্লীর বাসিন্দা ৷ ঘর থেকে বের করে দিয়েছে তারই ছেলে তরুণ দত্ত। একাধিক শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ওই বৃদ্ধা বাধ্য হয়ে আপাতত তাঁর মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। 2019 সালে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি ছেলের সঙ্গেই থাকতেন। রিক্তা দত্তর বক্তব্য, 2019 সালের পর থেকে ছেলে তাঁকে ক্রমাগত বাড়ি-সহ যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। স্বামীর তৈরির বসত বাড়ির মোট চারটি ভাগ রয়েছে। দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং মা হিসাবে তাঁর একটা ভাগ। 2020 সালে ওই বৃদ্ধা ছেলের কথা শুনে সমস্তটাই দানপত্র করে দেন ছেলের নামে।
সেই দানপত্রে এক মেয়েও স্বাক্ষর করেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু মিঠু দত্ত নামে আর এক মেয়ে দানপত্রে সই করেননি। এরপরই মায়ের উপর লাগাতার মানসিক নির্যাতন শুরু করে তাঁর ছেলে ৷ এমনকী বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হতো বলে অভিযোগ। রিক্তা দত্ত পুলিশকে জানিয়েও কোনও সুরাহা পাননি বলে আদালতে অভিযোগ করেন ৷ এরপর চলতি বছরের মার্চ মাসে তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। বাধ্য হয়েই তিনি মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
এরপরই অবশেষে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি জীবনের শেষকটা দিন তাঁর ভিটেমাটিতেই যাতে থাকতে পারেন সেই আর্জিই আদালতের সামনে রেখেছেন ওই বৃদ্ধা ৷ বিচারপতি সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়েছেন, যেদিন বৃদ্ধা সোনারপুর থানাকে জানাবেন তিনি বাড়ি ফিরতে চাইছেন, সেদিনই তাঁকে উপযুক্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে বাড়িতে থাকার ব্যাবস্থা করে দিতে হবে। বাড়িতে কোনও রকম অশান্তি যাতে তাঁকে ভোগ করতে না হয়, এবং ভবিষ্যতে যে কোনও রকম তাঁর পুলিশি সহায়তার প্রয়োজন হলে সোনারপুর থানাকে অবিলম্বে তা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন:
- আমলা-রাজ্যপালের অনুমতির গেরোয় থমকে বিচার, সিবিআইকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ
- বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পুলিশকে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
- নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, মুখ্যসচিবের ভূমিকায় অবাক হাইকোর্ট