বোলপুর, 24 জুলাই: প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নির্মাণ শুরু করেছিল বোলপুরের ‘সবুজপত্র’ আবাসন ৷ বুধবার এর প্রতিবাদে বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভে নামল জমিহারা কৃষকরা ৷ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বোলপুর থানার পুলিশ ।
‘সবুজপত্র’ আবাসনে (ইটিভি ভারত) পরে ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা এবং পুলিশ গিয়ে ফের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় ৷ সেখানেও প্রশাসনিক গাফিলতি তুলে বিক্ষোভ দেখান জমিহারা কৃষকরা ৷ সব মিলিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি । প্রতিবাদের পাশাপাশি জমি ফেরত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন জমিহারা চাষিরা ৷ এই বর্ষায় তাঁরা চাষ করতে চান, বারবার এই দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা ৷
জমিহারা কৃষকদের অভিযোগ, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ফের নির্মাণ শুরু করেছিল ‘সবুজপত্র’ আবাসন সংস্থা ৷ প্রতিবাদে বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ঘেরাও করে শুরু হয় বিক্ষোভ ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে বোলপুর থানার পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে ৷ নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে সবুজপত্রে অভিযান চালান ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা । সঙ্গে ছিলেন পাড়ুই থানার পুলিশ । এখানেও প্রশাসনিক গাফিলতি তুলে বিক্ষোভ দেখায় জমিহারা কৃষকরা । বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি ।
কৃষকদের মধ্যে আশিস ঘাটোয়াল, শ্যামলাল হাঁসদা বলেন, ‘‘প্রশাসন কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে ৷ তাও সবুজপত্র লুকিয়ে কাজ করছে ৷ কেন প্রশাসন দেখছে না ? আমরা 4 বছর ধরে নিজেদের পাট্টা জমিতে চাষ করতে পারছি না । ভয় দেখিয়ে দখল করে রেখেছে ৷ এই বর্ষায় চাষ করতে চাই ৷ চাষ না করলে খাব কী ? যদি এই বর্ষায় চাষ করতে না পারি বৃহত্তর আন্দোলন করব ।’’
বিতর্কিত আবাসনের জমি সরকারি খাতে অন্তর্ভুক্ত করল প্রশাসন, বোলপুরে পথে জমিহারারা
প্রসঙ্গত, 'জমি দিবি নাকি ছেলের মাথা নিবি' হুমকি দিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ৷ এ নিয়ে খবর করে ইটিভি ভারত ৷ সেই খবরের জেরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পারে প্রায় 37 জনের পাট্টা জমি দখল করে গড়ে উঠেছে 'সবুজপত্র' আবাসন প্রকল্প ৷ শনিবার দখলীকৃত 34 বিঘা জমি সরকারি খাতে অন্তর্ভুক্ত করে প্রশাসন ৷ এরপর এই জমির প্রাপকদের তালিকা তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে ৷
বীরভূম জেলার পাড়ুই থানার সাত্তোর গ্রাম পঞ্চায়েতের সরপুকুর ডাঙ্গায় প্রায় 37 জনের পাট্টা জমি দখল করে ‘সবুজপত্র’ নামে আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে ৷ অভিযোগ, বলপূর্বক ভয় দেখিয়ে পাট্টা জমি দখল করে নেয় বেসরকারি সংস্থা ৷ যা নিয়ে জমিহারা কৃষকরা বীরভূম জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, ভূমি সংস্কার দফতর, বোলপুর মহকুমাশাসককে আগেই চিঠি দিয়েছে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রথমেই বেসরকারি আবাসন সংস্থার বৃহৎ এলাকা জুড়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন । পাশাপাশি, প্রায় সাড়ে 34 বিঘা জমি সরকারি খাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রশাসন ৷ অর্থাৎ, পাট্টা জমি দখলের অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হয়েছে ।