সন্দেশখালি, 10 ফেব্রুয়ারি: শনিবারই দলের তরফে সাসপেন্ড করা হয় শাহজাহান ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দারকে। দলের হাত তাঁর মাথা থেকে সরে যেতেই পুলিশের জালে উত্তম ৷ শনিবার রাতে সন্দেশখালি থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শাসক দলের এই প্রাক্তন নেতাকে। উত্তমের পাশাপাশি এদিন বিজেপির বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের কনভেনর বিকাশ সিংহকেও গ্রেফতার করেছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। ধৃত দু'জনকেই এদিন রাতে কড়া নিরাপত্তায় নিয়ে আসা হয়েছে সন্দেশখালি থানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, জুলুমবাজি এবং শোষণের অভিযোগেই এদিন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দারকে পাকড়াও করা হয়েছে। তবে, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে অন্য একটি মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে। জানা যায়, বিজেপি নেতা বিকাশের বিরুদ্ধে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ আছে ৷ ধৃত দু'জনকেই নিজেদের হেফাজতে নিতে রবিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করবে পুলিশ।
গত তিনদিন ধরে শাহজাহান ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসছিল সন্দেশখালি। সাধারণ গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভে কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেখানে। তবে, শুধু উত্তম নয়, শাহজাহান এবং তাঁর আরও এক ঘনিষ্ঠ নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবুর গ্রেফতারের দাবিতেও সোচ্চার হয়েছিলেন ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা । এনিয়ে পথে নেমে তিন তৃণমূল নেতার 'আচরণের' বিরুদ্ধে মুখর হয়েছিলেন তাঁরা। আন্দোলনের তীব্রতা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে তার আঁচে পুড়ে খাক হয়ে যায় শিবু ও উত্তমের একাধিক পোল্ট্রি ফার্ম, বসতবাড়ি এবং বাগান বাড়িও। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সন্দেশখালি থানার পুলিশকে।
শেষে অশান্ত সন্দেশখালিকে শান্ত করতে ছুটে আসতে হয় রাজ্য পুলিশের একাধিক পদস্থ কর্তাকে। নামাতে হয় র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্সও। গ্রামে গ্রামে ঢুকে পুলিশকে টহল দিতেও দেখা গিয়েছে ৷ এমনকী সন্দেশখালি 2 নম্বর ব্লকজুড়ে 144 ধারা এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়েছে প্রশাসনকে। এরপরই পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ্য হন পুলিশ প্রশাসন।