মালদা, 24 ডিসেম্বর: টাকার বৃষ্টি ! আর তা কুড়োতে হইচই সাত থেকে সত্তরের ৷ হইহই-কাণ্ড মালদার হবিবপুর ব্লকের ছাতিয়ানগাছি গ্রামে ৷ এমন ঘটনা জেনে অবাক স্বয়ং বিডিও ৷ রহস্য উন্মোচনে তাই তিনি বিজ্ঞান মঞ্চের দ্বারস্থ হচ্ছেন ৷
বুলবুলচণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ানগাছি গ্রামে সোমবার সন্ধে থেকে নাকি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আকাশ থেকে টাকার বৃষ্টি হচ্ছে ৷ মানে আকাশ থেকে টাকা পড়ছে ৷ শুধু সোমবার নয়, মঙ্গলবার সকালেও নাকি একই ঘটনা ঘটেছে ৷ তবে একটানা নয়, দফায় দফায় আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে টাকা ৷ এই খবর চাউর হতেই সেই জায়গায় ভিড় জমিয়েছে ছেলে-বুড়ো সবাই ৷ যখনই টাকা পড়ছে, সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ৷ যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকছে ৷
হবিবপুরের আকাশ থেকে টাকার বৃষ্টি, কুড়োতে গ্রামবাসীদের হুড়োহুড়ি ৷ (ইটিভি ভারত) মালদা শহর থেকে বামনগোলার দিকে যাওয়ার পথে বুলবুলচণ্ডিতে ঢোকার মুখেই একটি রেল ব্রিজ রয়েছে ৷ তার দেড়শো মিটার আগে মূল সড়ক থেকে বামদিকে গিয়েছে একটি ছোট রাস্তা ৷ রাস্তাটি দিয়ে দু’শো মিটার দূরে গেলেই পড়বে খাঁড়ির উপর থাকা একটি কাঠের ছোট সেতু ৷ সেই সেতু পেরোলেই ঘটনাস্থল ৷
গ্রামবাসীদের দাবি, গতকাল সন্ধে থেকে এই ঘটনা শুরু হয়েছে ৷ অনেকেই টাকা কুড়িয়ে পেয়েছেন ৷ বেশিরভাগই কয়েন ৷ তবে, নোটও পড়ছে ৷ সবই ভারতীয় মুদ্রা ৷ এই টাকার বৃষ্টি কীভাবে হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না গ্রামবাসীরা ৷
এক গ্রামবাসী মিতুল সরকার দাবি করেন, "গতকাল সন্ধে থেকে এই ঘটনার সাক্ষী আমরা ৷ রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত কখনও এক বা দু’টাকার কয়েন, কখনও বা পাঁচ থেকে 10 টাকার কয়েনও আকাশ থেকে পড়ছিল ৷ কিন্তু, সেসব কোথা থেকে পড়ছে কেউ জানে না ৷ রাত সাড়ে ন’টার পর অবশ্য সব বন্ধ হয়ে যায় ৷ আজ সকাল সাতটা থেকে ফের শুরু হয়েছে ৷"
ওই ব্যক্তি বলেন, "যেখানে এই ঘটনা ঘটছে, সেখানে দু’টো গাছ ছাড়া আর কিছু নেই ৷ এই খবর চাউর হতেই সকাল থেকে ভিড় জমছে ৷ যত বেলা গড়িয়েছে, ভিড়ও তত বেড়েছে ৷ এলাকার প্রায় প্রত্যেকেই কয়েন বা নোট পেয়েছে ৷ একটি বাচ্চা ছেলে 200 টাকার নোটও পেয়েছে ৷ এসব কোথা থেকে পড়ছে, আমরা বুঝতে পারছি না ৷ তবে, এর পিছনে অবশ্যই কোনও মানুষের হাত রয়েছে ৷"
আজব এই খবর পেয়ে বিকেল নাগাদ ঘটনাস্থলে এসেছিলেন পাশের গ্রামের শ্রীমতি হালদার ৷ তবে, তিনি এই ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারেননি ৷ জানালেন, "লোকজনের মুখে শুনলাম, এখানে নাকি গাছ থেকে টাকা পড়ছে ৷ সেকথা শুনেই ছুটে এসেছি ৷ তবে, আমার সামনে আকাশ থেকে টাকা-পয়সা এখনও পড়েনি ৷ কখন পড়বে, তার অপেক্ষাতেই রয়েছি ৷"
এমন ঘটনার কথা জেনে হতবাক হবিবপুরের বিডিও মনোজ কাঞ্জিলাল ৷ তিনি জানালেন, "গতকাল সন্ধে থেকে এই ঘটনা ঘটছে ৷ অথচ আমার জানা ছিল না ৷ আমি এখনই খোঁজখবর নিচ্ছি ৷ এ নিয়ে যাতে সেখানে আইনশৃঙ্খলার কোনও অবনতি না-হয়, তার জন্য পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলছি ৷ এই রহস্যভেদ করতে আজই জেলার বিজ্ঞান মঞ্চের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করব ৷ তাঁরা যাতে দ্রুত সেই রহস্যভেদ করেন, সেই আর্জি জানাব ৷"
জেলার আরও খবর পড়ুন...