কলকাতা, 13 মার্চ:নিয়োগ দুর্নীতি প্রমাণিত হলে বাতিল করা হতে পারে সম্পূর্ণ নিয়োগ বা নিয়োগের অংশবিশেষ। বুধবার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। এদিন প্রাথমিক পর্যবেক্ষণেই বিচারপতি দেবাংশু বসাক জানান, দু’টি বিকল্প আদালতের কাছে আছে ৷ সমস্ত পক্রিয়াই প্রথামিক পর্যায়ে ৷ সবকিছু খতিয়ে দেখবে আদালত ৷ সবটা অবৈধ হলে পরিণতি যা হওয়ার তাই হবে ৷
এদিনের শুনানিতে ফের কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবীরা। তাঁদের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র সওয়াল করেন, "স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে আদালতের সামনে সব কথা বলা হচ্ছে না। কমিশনের কারা কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তা প্রকাশ্যে আনা হোক । ওএমআর স্ক্যান করার বরাত কাকে এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছিল সেটাও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হোক ৷" আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র আরও উল্লেখ করেন, টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া কমিশনের দফতরে হয়েছিল। এখন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে সিবিআই-এর রিপোর্টে নাম থাকা ডেটা স্ক্যানটেক সংস্থার নামই তারা জানে না ৷ এই কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা কি ?"
এরপরই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের প্রশ্ন ?
পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি পেলে তার সঙ্গে কি করা উচিত ? পদ ভরাতে হবে বলে অযোগ্যদের নিয়োগ কেন? কমিশনকে বিশ্বাস করতে না পারলে তো গোটা নিয়োগই বাতিল করা উচিত। তাহলে গোটা প্রক্রিয়াটাই তো অস্বচ্ছ ৷ মন্তব্য বিচারপতির । চাকরি প্রার্থীদের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, "এটা কি কোনও বিধিবদ্ধ সংস্থার কাজের পদ্ধতি হতে পারে ? আপনি ঘটনাক্রম দেখুন। একটা পরীক্ষা নেওয়া হল, মূল্যায়নের জন্য একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হল, তারা আবার অন্য কাউকে নিয়োগ করল। সবটাই কমিশনের চোখের সামনে হয়েছে ৷ কিন্তু তারা বলছে, কিছু জানে না। তাহলে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কি কোনও স্বচ্ছতা থাকল ?" তিনি আরও উল্লেখ করেন, "এখন বিতর্কিত চাকরি প্রাপক এবং তাদের পরিবারের 10 হাজার লোকের কথা বলা হচ্ছে । যে 23 লাখ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন তাঁদের কথা ভাবতে হবে তো । তারা কি চেয়েছিলেন ? তাঁরা শুধু চেয়েছিলেন যে গোটা প্রক্রিয়াটা যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় ।
এরপরই বিচারপতি দেবাংশু বসার প্রশ্ন তোলেন, কেউ যদি পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি পায় তার সঙ্গে কি করা উচিত ?" বিচারপতির এই প্রশ্নের পালটা সওয়াল করেই চাকরি প্রাপকদের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, "তাঁকে যেতেই হবে। সেটা সামনের দরজা দিয়ে হোক বা পিছনের দরজা দিয়ে। কিন্তু তাঁকে আইনত আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।" এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন যারা 5 বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন তাঁদের কী হবে? বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, "যদি সবটা অবৈধ বা বেআইনি হয় তাহলে যা পরিণতি হওয়ার সেটাই হবে। "
আরও পড়ুন:
- নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রতিদিন সময় চাইছে এসএসসি, বেজায় চটলেন বিচারপতি
- নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে সহযোগিতা করতে পারছে না এসএসসি, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের সক্রিয় ইডি, পার্থ ঘনিষ্ঠের বাড়িতে হানা