কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: টানা বৃষ্টিতে ফুঁসছে নদীগুলি । প্রায় আড়াই লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছেড়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ । যার ফলে দামোদর নদের নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত গ্রামগুলি প্লাবিত হয়েছে । বন্যার পরিস্থিতি বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি-সহ একাধিক জেলায় ৷ বুধবার বন্যা পরস্থিতি পরিদর্শনে জেলা সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ জেলায় জেলায় পরিস্থিতি ঘুরে দেখছেন অন্যান্য মন্ত্রীরা ৷ একনজরে দেখে নেব বন্যা পরিস্থিতিতে জেলাগুলির হালহকিকৎ ৷
- বাঁকুড়া
বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে মন্ত্রী: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বাঁকুড়ায় যান রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক । এ দিন তিনি বাঁকুড়া সার্কিট হাউসে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেন । সেখানে তিনি বলেন, "প্রতিবছর দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন রাজ্য সরকারকে না-জানিয়ে লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়ে দেয় ৷ যার ফলে দক্ষিণ দামোদরের বিভিন্ন জেলা যেমন বাঁকুড়া, হুগলি, মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় । অনেক মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে । জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরাও এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য সচেষ্ট রয়েছেন ।"
আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা: রাতের দিকে জলস্তর হু হু করে বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা । কিন্তু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাতের বেলায় তড়িঘড়ি দুর্গতদের নৌকা করে নিয়ে গিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা হয় । একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করে বন্যা দুর্গতদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয় ৷ নিম্ন অববাহিকার গ্রামবাসীদের সতর্কও করা হয়েছে ।
সোনামুখীতে ভয়াবহ পরিস্থিতি: সোনামুখী ব্লকের রাধামোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর নিত্যানন্দপুর, সমিতিমানা, পাণ্ডে পাড়া, অন্যদিকে ডিহিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঙামাটি কেনেটিমানা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা এই মুহূর্তে জলমগ্ন । একেবারে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । সমিতিমানা গ্রামে এক ব্যক্তির পাকা বাড়ি ভেঙে গিয়েছে । পাশাপাশি রাস্তা ভেঙে যাওয়াতে সমিতিমানা গ্রামের কয়েকশো পরিবার রিলিফ সেন্টারে যেতে পারেনি । বাড়িতে এক কোমর জল থাকায় খাওয়া দাওয়া ও রান্নাবান্না সবকিছুই বন্ধ রয়েছে । চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে এলাকার সাধারণ মানুষদের । তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে কারণে এলাকায় নজর রাখছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ।
- পশ্চিম বর্ধমান
দুর্গাপুরেও পরিদর্শনে মন্ত্রী: দক্ষিণবঙ্গ-সহ ঝাড়খণ্ডে অতি বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজের নিম্ন অববাহিকার বিস্তীর্ণ এলাকা । বাঁকুড়ার পাশাপাশি এ দিন দুর্গাপুরের জলমগ্ন এলাকাগুলিও পরিদর্শন করেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক । রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির জন্য ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন তিনি ।