চন্দননগর, 21 অগস্ট: চন্দননগরের আলোক শিল্পে নক্ষত্রপতন । প্রয়াত বিখ্যাত আলোকশিল্পী বাবু পাল । 64 বছর বয়সে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে গেলেন তিনি । অসুস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৷ গতকাল রাতে সেখানেই তাঁর জীবনাবসান ঘটে ৷ তাঁর প্রয়াণে শুধু দেশ নয়, শোকে মুহ্যমান বিদেশে থাকা বাঙালিরাও ।
যে কোনও পুজো বা উৎসবে চন্দননগরের আলোকসজ্জা অন্য এক মাত্রা দেয় । সেখানকার জগদ্ধাত্রী পুজো ও শোভাযাত্রার আলোকসজ্জার খ্যাতি আজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে । এই শিল্পের অন্যতম কারিগর ছিলেন বাবু পাল । অমিতাভ বচ্চন থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের বাড়িতে চন্দননগরের আলোর জাদু ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিনি । তাঁর প্রয়াণে শোকাহত আলোকশিল্পী থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সদস্যরা ।
টুনি বাল্ব থেকে এলইডি আলোর যুগ । বিজ্ঞানের গতিপথ ধরে চন্দননগরের আলোক শিল্প যে উচ্চতায় পৌঁছেছে, তাতে বাবু পালের অবদান নেহাত কম নয় । গোটা ভারত-সহ দুবাই ফেস্টিভ্যাল, এমনকি প্যারিসেও গিয়েছে তাঁর আলো শিল্প । কলকাতার দুর্গাপুজো থেকে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় আলোক শিল্পকে আলাদা মাত্রা দিয়েছিলেন তিনি । তাঁর মৃত্যুতে আলোকশিল্পের একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেল বলেই মনে করছে চন্দননগর ।
চন্দননগরের আলোকশিল্পের জনক হলেন শ্রীধর দাস । 1973 সালে চন্দননগর বাগবাজার জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি প্রথমবার আলোর শোভাযাত্রা শুরু করে । তার দীর্ঘদিন পর কলকাতার লোহার ব্যবসা ছেড়ে চন্দননগরে চলে আসেন সুপ্রিমকুমার পাল ওরফে বাবু পাল । চুঁচুড়ার শিল্পী অলোক প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন । অল্পদিনের মধ্যেই তিনি খ্যাতি অর্জন করেন । জগদ্ধাত্রী পুজোর আলোর শোভাযাত্রা বিখ্যাত হয়ে ওঠে তাঁর হাত ধরেই । ওই শিল্পে টুনি বাল্ব থেকে এলইডি'র অভিনবত্ব আনেন তিনিই । বাঁশের বাকারি থেকে লোহার মেকানিক্যাল স্ট্রাকচার জনপ্রিয়তা পায় তাঁর আমলেই । হালের শ্রীভূমি স্পোর্টিং-এর পুজো থেকে কলকাতার একাধিক নামি দুর্গাপুজো মণ্ডপ বাবু পালের আলোতেই সেজে ওঠে । তিনি চেয়েছিলেন, চন্দননগরের আলোকশিল্পের সার্বিক উন্নতি হোক ।