ধর্মতলার আন্দোল মঞ্চ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে অনিকেতকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। সেখানে সিসিইউতে তাঁর চিকিৎসা করছেন অধ্যাপক চিকিৎসক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা, 11 অক্টোবর: আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোকে। চিকিৎসক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেই বোর্ডের তরফে বলা হয়েছে, অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, যা সারতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা সকলেই তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী।
সকাল থেকেই শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল জুনিয়র চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতোর। তাঁর মূত্রে কিটোন বডির উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল, যা নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। অন্যদিকে, সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে আসেন চার সরকারি চিকিৎসক। তাঁরা এসে সকল অনশনকারীর শারীরিক পরীক্ষা করেন। তারপর আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন স্নিগ্ধা এবং অনিকেতের শারীরিক অবস্থা নিয়ে। চিকিৎসকদের চলে যাবার কয়েক ঘণ্টা পরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিকেত মাহাতো।
ধর্মতলার আন্দোল মঞ্চ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে অনিকেতকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। সেখানে সিসিইউতে তাঁর চিকিৎসা করছেন অধ্যাপক চিকিৎসক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, শরীরে জলের মাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছে। পায়ে যন্ত্রণা হচ্ছে, আল্ট্রা সাউন্ড করা হয়েছে ৷ শরীরে জল কম থাকলে যা যা সমস্যা হয়, তাই দেখা দিয়েছে অনিকেতের শরীরে। ইউরিনে কিটনের মাত্রা চার পেরিয়ে গিয়েছে। শরীরের কোষ পর্যন্ত জল পৌঁছাচ্ছে না। অনিকেতের রক্তচাপের সমস্যা ছিল, যে কারণে ইকো করা হয়েছে।
এই সমস্যা থাকার কারণে ওর শারীরিক জটিলতা আরও বাড়ছে। যদিও চিকিৎসক বলেন, "আমরা চিকিৎসা শুরু করেছি। কিন্তু, ওর শরীরে যা ক্ষতি হয়েছে, তা সারতে সময় লাগবে। এখনও ওকে স্থিতিশীল বলা যাবে না, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। "
জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "আমি মিডিয়া রিপোর্ট থেকে জানতে পেরেছি যে অনিকেত মাহাতো, যিনি শনিবার সন্ধ্যা থেকে 'আমরণ অনশনে' বসা সাতজন বিশিষ্ট জুনিয়র ডাক্তারের একজন, তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডর্নিয়া ক্রসিং-এ অনশন-ধর্মঘট সপ্তম দিনে ৷ তবুও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অনশনে বসা চিকিৎসকদের প্রতি কোনও সহানুভূতি দেখায়নি বা তাদের ন্যায্য দাবি বিবেচনা করার জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমি এবং রাজ্যের লোকজন অনিকেত মাহাতোর স্বাস্থ্য নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন যিনি আরজি কর-এর ধর্ষণ ও হত্যার শিকারের বিচার চেয়ে আন্দোলনের সামনে ছিলেন। অনিকেত মাহাতোর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে, রাজ্য সরকার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিষয়টির দেখবে যাতে জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের অনশন শেষ করতে পারে এবং তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।"