কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: শুধু নকল পাসপোর্ট বানানো হয়েছে তেমনটা নয় ৷ ধৃত দীপঙ্কর দাস তিন হাজার জনের হাতে জাল পাসপোর্ট তুলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ৷ এবার সেই সব নাম জানার চেষ্টা করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷ বুধবার দীপঙ্করকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে, বিচারক ধৃতকে আটদিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছেন ৷
এ দিন আদালতে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দীপঙ্কর দাসকে জেরা করে তাঁদের হাতে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে ৷ ধৃত জানিয়েছেন, তিনি এখনও পর্যন্ত তিন হাজার জনকে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ৷ গোয়েন্দারা মনে করছেন, সেই সব বাংলাদেশিদের মধ্যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের সদস্যরাও থাকতে পারে ৷
ফলে এমন লোকজনের হাতে জাল পাসপোর্ট চলে যাওয়া দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় বিপদের ইঙ্গিত ৷ গোয়েন্দারা দীপঙ্করের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নদীপত্র উদ্ধার করেছেন ৷ যেখানে কম্পিউটার থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের ৷
হাতে আসা তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এই জাল পাসপোর্ট-কাণ্ডে কেবলমাত্র পোস্ট অফিসের অস্থায়ী কর্মীরা যুক্ত নন ৷ বরং, পোস্ট অফিস এবং একাধিক ব্যাংকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও জড়িত থাকতে পারেন ৷
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রাজ্যের অধিকাংশ পোস্ট অফিসে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা খুবই কম ৷ তাই বাইরে থেকে অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা হয় ৷ সেই অস্থায়ী কর্মী হিসেবে পোস্ট অফিসগুলিতে ঢুকে যেত জাল পাসপোর্ট চক্রের লোকজন ৷ অভিযোগ, এরপর পোস্ট অফিসে বিভিন্ন চিঠি ও অফিসিয়াল ডকুমেন্টস আসলে সুকৌশলে তার ঠিকানা মুছে দিত ৷ পরিবর্তে লিখে দিত অন্য কোনও ভুয়ো ঠিকানা ৷
এর ফলে ঠিকানা খুঁজে না-পাওয়ায় চিঠিগুলি ফেরত চলে আসত পোস্ট অফিসে ৷ এরপর সেই চিঠি খুলে, তার থেকে ডকুমেন্টস হাতিয়ে চাহিদা মতো নকল পরিচয়পত্র বানানো হতো ৷ তারপর সেগুলি পৌঁছে যেত অনুপ্রবেশকারীদের হাতে ৷ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের ধরতে তৎপর হয়েছে গোয়েন্দারা ৷ এ দিন ধৃত দীপঙ্কর দাসকে আলিপুর আদালতে তোলা হয় ৷ 26 ডিসেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ, 8 দিনের পুলিশ হফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷