ব্যারাকপুর, 16 জুলাই: গ্রেফতারের পাঁচদিন পরেই জামিন পেয়ে গেল আড়িয়াদহে নাবালক যৌন নিপীড়ন-কাণ্ডের 'মাস্টারমাইন্ড' জয়ন্ত সিংয়ের সঙ্গী প্রসেনজিৎ দাস ওরফে লাল্টু ৷ মঙ্গলবার তার জামিন মঞ্জুর করেছে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত ৷ 2 হাজার টাকার ব্যাক্তিগত বন্ডে জয়ন্ত'র এই শাগরেদের জামিন মঞ্জুর হয়েছে বলে সূত্রের খবর ৷
জামিন পেল আড়িয়াদহের গ্যাং লিডার জয়ন্ত সিংয়ের গ্যাংয়ের সদস্য লাল্টু (ইটিভি ভারত) 11 জুলাই সাঁড়াশি দিয়ে নাবালককে বিবস্ত্র করে নারকীয় অত্যাচারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিল লাল্টু ৷ সেদিন ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতেরই বিচারক তাকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ এরপর এদিন জামিন হয়ে যাওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে !
আরও প্রশ্ন উঠছে, নাবালক যৌননিগ্রহ-কাণ্ডে এর আগে অভিযুক্ত লাল্টুর জামিন ঠেকাতে পুলিশ কি কোনও উদ্যোগ নিয়েছিল ? নাকি এই পুলিশই জামিনের বিরোধিতার বদলে উলটে জয়ন্ত'র শাগরেদ লাল্টুর জামিনের পথ প্রশস্ত করে দেয়নি তো ? এমনই সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ৷
প্রসঙ্গত, আড়িয়াদহে মা ও ছেলেকে গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং ও তার গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে ৷ সম্প্রতি জয়ন্ত বাহিনীর আরও এক পাশবিক অত্যাচারের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায় ৷ সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ইটিভি ভারত ৷
তবে ওই ভিডিয়োয় দেখা যায়, চোর সন্দেহে এক নাবালককে বিবস্ত্র করে যৌনাঙ্গে সাঁড়াশি দিয়ে চেপে নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে জয়ন্ত'র সঙ্গী প্রসেনজিৎ দাস ওরফে লাল্টু ৷ আর ওই নাবালক তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবের ভিতরেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ৷ সেই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই পুলিশ গত বৃহস্পতিবার, 11 জুলাই গ্রেফতার করে ঘটনার 'মাস্টারমাইন্ড' জয়ন্ত'র শাগরেদ প্রসেনজিৎ দাস ওরফে লাল্টুকে ৷ সেদিনই ধৃত লাল্টুকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন ৷
এদিকে, আড়িয়াদহ-কাণ্ডে ধৃত জয়ন্ত সিং-সহ তাঁর সাত শাগরেদকে মঙ্গলবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ ৷ তার মধ্যে জয়ন্ত সিং ও সৈকত মান্না ওরফে জঙ্গা-কে দক্ষিণেশ্বর থানার অন্য একটি মামলায় যুক্ত করে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ ৷ সেই মামলায় অভিযুক্ত এই দু'জনকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে দক্ষিণেশ্বর থানায় একাধিক সংগঠিত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে ৷ তার মধ্যে সম্প্রতি এক প্রোমোটারের বাড়িতে হামলার অভিযোগও উঠেছে ৷ সেই মামলাতেই এদিন জয়ন্ত এবং সৈকতকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে, আড়িয়াদহ-কাণ্ডে ধৃত সুমন দে-কে সাত দিনের পুলিশি হেফাজত এবং সন্দীপ সাহা, সুভাষ বেড়া, অভিষেক বর্মনকে এদিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷