পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

নৈহাটিতে তৃণমূল কর্মীকে ইঁট দিয়ে থেঁতলে খুন! প্রকাশ্যে হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ - TRINAMOOL LEADER MURDER CASE

এই ঘটনায় ন’জনের নামে নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর ৷

TRINAMOOL LEADER MURDER CASE
নৈহাটিতে তৃণমূল কর্মীকে ইঁট দিয়ে থেঁতলে খুন! প্রকাশ্যে হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ (প্রতীকী ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 1, 2025, 9:08 PM IST

নৈহাটি, 1 ফেব্রুয়ারি: তৃণমূল কর্মী খুনে এবার প্রকাশ্যে এল ঘটনার হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ । সেখানে দেখা গেল পুলিশের দাবিই ঠিক ৷ গুলি করে নয়, নৈহাটিতে থেঁতলে খুন করা হয়েছে সন্তোষ যাদব নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে ৷ যদিও তৃণমূল বিধায়ক এখনও গুলি করে খুনের তত্ত্বেই অনড় ৷

খুনের ঘটনার পরই তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান, প্রত‍্যেকেই একবাক্যে দাবি করেছিলেন দলীয় কর্মী সন্তোষ যাদবকে গুলি করে খুন করা হয়েছে । যদিও পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়ার দাবি ছিল এর ঠিক উল্টোটা । তিনি পাল্টা দাবি করেছিলেন, গুলি নয় ! ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছে সন্তোষ যাদবকে । খুনের ঘটনায় ভিন্ন মত ঘিরে কার্যত চাপানউতোর শুরু হয়ে যায় গঙ্গাপাড়ের শিল্পাঞ্চলে ।

রাজনৈতিক চাপানউতোর মধ্যেই এবার সামনে এসেছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ । যে ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী এক ব্যক্তিকে ইট দিয়ে অনবরত আঘাত করছেন । থেঁতলে থেঁতলে তাঁকে মেরে ফেলছেন । ঘটনা দেখে একজন সামনে এলে তাঁর দিকে তেড়ে যাচ্ছেন অন‍্য এক দুষ্কৃতী । সিসিটিভি-র ফুটেজ বলছে ঘটনাটি দুপুরের ঠিক পরে । এই ফুটেজ নিয়েই এখন জোর শোরগোল । তাহলে কি তৃণমূল কর্মী সন্তোষকে থেঁতলেই খুন করা হয়েছে ?

যদিও তা মানতে নারাজ নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক সনৎ দে । এখনও নিজের মন্তব্যে অনড় রয়েছেন তিনি । সনৎ স্পষ্ট বলছেন, "গুলি করেই সন্তোষকে খুন করা হয়েছে । প্রথমে গুলি করা হয় তাঁকে । এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওঁকে ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে । প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের পোষা গুন্ডা রাজেশ সাউ ও তার দলবলই এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত । পুলিশ এখনও কাউকেই গ্রেফতার করেনি ঠিকই । কিন্তু, তৎপর হয়েছে দোষীদের খুঁজে বের করার ।"

এদিকে, খুনের ঘটনার পর নৈহাটি'র একাধিক এলাকায় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি এবং অর্জুন সিংয়ের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে । সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সনৎ দে বলেন, "দলের কোনও কর্মীই এই হামলা, ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন ! যা হয়েছে সবটাই জনরোষের ফল । মানুষ তাঁর এলাকার ছেলেকে খুন হতে দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি । তার ফলে কোথাও কোথাও হয়তো হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে । অর্জুন সিং কী বলল, না বলল তাতে কিছু আসে যায় না । মানুষ ওঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে ।"

পালটা এই নিয়ে অর্জুন সিং আবার তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে । তাঁর দাবি, "ব‍্যাক্তিগত আক্রোশেই খুন হতে হয়েছে সন্তোষকে । এর মধ্যে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই । তা সত্ত্বেও বিষয়টিকে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা চলছে । সিসিটিভি ফুটেজেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত । দু’টি বাইকে মোট ছ'জন এসে ওঁকে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করেছে । অথচ পুলিশ মোট ন'জনের নামে এফআইআর করেছে । অর্থাৎ বাকি তিনজনের নাম ষড়যন্ত্র করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ।"

অন্যদিকে, খুনের পর নৈহাটি তপ্ত হওয়ার ঘটনায় সাংসদ পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক সনৎ দে-কে দুষে অর্জুন বলেন, "আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জেহাদিদের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ করায় আমার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে । আমার বিরুদ্ধে যদি মামলা হতে পারে, তাহলে কেন তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়কের নামে মামলা হবে না ? তাঁরাও তো গুলি করে খুন করার তত্ত্ব খাড়া করেছিল । যার দরুণ বিজেপির অন্তত 20 জনের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে । পুলিশ কিছু না করলে আমি হাইকোর্ট যাব । প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করব । যাতে নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো যায় । সেটা সিবিআই অথবা এনআইএ-ও হতে পারে ।"

এদিকে, তৃণমূল কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত রাজেশ সাউ-সহ মোট ন'জনের নামে নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার । সূত্রের খবর, ন'জনের মধ্যে একজন দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । তবে পুরো বিষয়ে পুলিশের তরফে কেউ মুখ খুলতে নারাজ ৷ এই পরিস্থিতিতে আবার ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার বদল হয়েছে ৷ অলোক রাজোরিয়ার জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজয় ঠাকুরকে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details