পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে আইনজীবী শামিম আহমেদের বক্তব্য কলকাতা, 9 এপ্রিল: পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রহস্যজনক চিঠি নিয়ে সিবিআইকে অনুসন্ধানের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের । ওই চিঠিতে পাহাড়ের স্কুল শিক্ষক ও পৌরসভায় বেআইনি কর্মী নিয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে । পুরো দুর্নীতির পিছনে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী এবং শাসক দলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম করে যুক্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে ।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু আগেই এই নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিআইডিকে । কিন্তু স্কুল শিক্ষা দফতর এই ব্যাপারে বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও থানার আইসি এফআইআর না করায় এ দিন তাঁকে তলব করে হাইকোর্ট । শিক্ষা দফতরের অভিযোগ কেন এফআইআর হিসেবে নিল না বিধাননগর থানা, অবাক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী 15 দিনের মধ্যে সিবিআই ওই চিঠির সত্যতা অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দেবে । থানার আইসি-কে, হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে কেন, তিনি অভিযোগ পাওয়ার পরেও এফআইআর করেননি । একই সঙ্গে জিটিএ জানাবে, প্রায় 700 জনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের পিছনে কতটা সত্যতা আছে । তাঁদের যোগ্যতা ও নিয়োগ কিভাবে হয়েছে, তার নথি দিতে হবে আদালতে ।
পাহাড়ে জিটিএ এলাকাতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে চিঠি দেন এক ব্যক্তি । নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি শিক্ষক নিয়োগের বাইরে পৌরসভায় কর্মী নিয়োগেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন । একজন সরকারি আধিকারিক হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, পাহাড়ে দু’দফায় প্রায় 700 জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে বেআইনিভাবে ৷
ওই চিঠিতে রয়েছে তৃনাঙ্কুর ভট্টাচার্য, মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক-সহ একাধিক শাসক দলের ছাত্র ও যুব নেতার নাম । একইসঙ্গে পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাং ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল চিঠিতে । তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও পাহাড়ের তৃণমূল নেতা বিনয় তামাংয়ের সৌজন্যে এই দুর্নীতি হয়েছে বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে ।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তথা সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তীর নামও রয়েছে চিঠিতে । প্রান্তিক চক্রবর্তীর হোয়াইস চ্যাট যেটা 2021 সালের মার্চ মাসের 1 তারিখ থেকে 7 তারিখ পর্যন্ত রেকর্ড পাওয়া গিয়েছে । সেখানে তিনি বলেছেন, পৌরসভায় নিয়োগের এডমিট কার্ড পাঠিয়ে দিয়ে মন্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । কারণ, এর জন্য অনেকের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে । প্রান্তিকের দাদাও এতে যুক্ত । এই ধরনের একাধিক ঘটনা রয়েছে বলে দাবি ওই আধিকারিকের । কিন্তু তিনি আদালতকে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে তাঁর নাম না প্রকাশ করা হয় । এই চিঠির ব্যাপারেই সিবিআইকে প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে ।
আরও পড়ুন:
- দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা, শিক্ষিকার বদলিতে অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের
- হচ্ছে কী? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা বিচারপতি বসুর
- পরীক্ষা ছাড়াই স্কুল সার্ভিস কমিশনে সাতশোর বেশি শিক্ষক নিয়োগ