কলকাতা, 27 জুন: ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে প্রায় 8 বছর আগে ৷ তারপরও বছরের পর বছর ধরে বহাল তবিয়েতে এ রাজ্যে ব্যবসা করছেন উমাশঙ্কর আগরওয়াল নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক ! এদেশের টাকা বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে ৷ এবার কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ প্রয়োজনে পিএমএলএ ধারা যুক্ত করে ইডির হাতে তদন্তভার দেওয়ার কথা বলল আদালত ।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে । তাঁকে আগেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ ৷ নিম্ন আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্ত ৷ এবার মামলা উঠল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে ৷ সেখানেই কড়া অবস্থান নিল আদালত ৷
কী হয়েছে ?
জানা গিয়েছে, সানথোলিয়া আগরওয়াল গ্রুপ নামে একটি কোম্পানি রয়েছে এই বাংলায়। সংস্থাটির মালিক উমাশঙ্কর আগারওয়ালা ৷ অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ওই সংস্থা বাংলাদেশ থেকে প্রচুর টাকা রাজ্যের বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে। এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্তে নেমেছে । তাতেই এবার আর্থিক দুর্নীতির বিষয় রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । পাশাপাশি প্রয়োজনে তদন্তভার ইডি’র হাতে তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
মামলাকারী মেঘা দত্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে আর্জি জানিয়েছেন, এই মামলায় অবিলম্বে আর্থিক তছরুপের ধারা যুক্ত করতে হবে । কারণ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন এবং চোরা কারবারিরা এই অর্থের দ্বারা উপকৃত হয় বলে তাঁর দাবি ৷ উমাশঙ্কর আগরওয়ালের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ আগেই স্বতঃস্ফূর্ত এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে । তাঁকে গ্রেফতারের পর আলিপুর আদালতে তোলা হলে তিনি অবশ্য জামিনও পেয়ে গিয়েছেন ।
কাদের আধার কার্ড বাতিল হচ্ছে, হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাল কেন্দ্র
উমাশঙ্করের পালটা অভিযোগ, তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । পুলিশ ইতিমধ্যে জামিন খারিজের দাবিতে হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছে । জুলাই মাসে সেই মামলার শুনানি রয়েছে । কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, উমাশঙ্কর আগরওয়াল নামে ওই ব্যক্তির বাংলাদেশের পাসপোর্ট রয়েছে।
2016 সালে তাঁর ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে ৷ তারপর থেকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে থেকে ব্যবসা করছেন তিনি । তদন্তকারীদের আশঙ্কা, তিনি আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করছেন। এই ব্যক্তি নিয়মিত আয়কর দিয়ে আসছেন । যদিও তদন্তকারীরা বলছেন, সম্পূর্ণ ভুয়ো আইডি ও প্যান কার্ড বানিয়ে তিনি এই আয়কর দিচ্ছেন । পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, 2019 সাল থেকে তিনি একাধিকবার তাঁর ঠিকানাও বদল করেছেন ।