পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

প্রতিবন্ধকতা থামিয়ে দিতে পারেনি, চন্দ্রিমার গল্প অনেকের অনুপ্রেরণা - womens day inspirational story

International Women's Day:আসানসোলের চন্দ্রিমা দে ৷ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোপি-তে আক্রান্ত হওয়ায় দু’দুবার অস্ত্রপচার হয় ৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন চন্দ্রিমা ৷ নারী দিবসে ইটিভি ভারত শুনল এই অসামান্য নারীর লড়াইয়ের গল্প।

Etv Bharat
Etv Bharat

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 7, 2024, 11:01 PM IST

Updated : Mar 8, 2024, 11:15 AM IST

প্রতিবন্ধকতা থামিয়ে দিতে পারেনি, চন্দ্রিমার গল্প অনেকের অনুপ্রেরণা

আসানসোল, 7 মার্চ:শিরদাঁড়ার জটিল রোগে আক্রান্ত চন্দ্রিমা দে ৷ যাস্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোপি নামে পরিচিত ৷ জন্ম থেকেই এই জটিল ও বিরল রোগে আক্রান্ত আসানসোলের চন্দ্রিমা দে। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা তাঁকে থামিয়ে দিতে পারেনি। মনের জোরে কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে এখন তিনি সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা । ছাত্রছাত্রী, সহকর্মীরা তো বটেই, তাঁর এই দীর্ঘ লড়াই সমাজের কাছে একটা দৃষ্টান্ত, অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন চন্দ্রিমা ।

যদিও তাঁর কাছে এটা কোনও লড়াই নয় ৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা বলেতে গিয়ে, চন্দ্রিমা জানান, ছোট থেকে তাঁর সংগ্রাম শুরু ৷ আর 5জন স্বাভাবিক শিশুর মত তিনি দাঁড়াতে পারতেন না। ফলে দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা, ওঠা বসা সবকিছুই ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় । রোগের কারণে, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিরদাঁড়া বেঁকে যেতে শুরু করে । এক সময় তিনি প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে যান । বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা হলেও, আসল রোগ ধরা পড়ছিল না ৷ অবশেষে চেন্নাইয়ে গিয়ে ধরা পড়ে রোগ ৷ জানা যায় চন্দ্রিমা বিরল এবং জটিল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোপিতে আক্রান্ত ।

চিকিৎসকদের কথামতো শিরদাঁড়ায় জটিল অস্ত্রপচার হয়। চেন্নাইয়ে দু’বার অস্ত্রপচার হয় ৷ শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও, হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হয়। তবে সোজা হয়ে দাঁড়াতে আজও কষ্ট হয়। অস্ত্রপচারের পর নিজের উচ্চতাও অনেকটাই কমে গিয়েছে। মন খারাপ কে জয় করেই পঠনপাঠনে মন দেন চন্দ্রিমা। ইংরাজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। তারপরে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে সরকারি স্কুলে চাকরি পান ।

প্রথমে রানিগঞ্জের একটি স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন চন্দ্রিমা । তারপর তার প্রতিবন্ধকতার কথা ভেবে রাজ্য সরকার তাঁকে বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ৷ বর্তমানে কুলটির মিঠানি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। তার সফলতার জন্য মিলেছে রাজ্য সরকারের পুরস্কার, জেলা প্রশাসনও তাঁকে সম্মান জানিয়েছে।
পরিবারের পাশাপাশি স্বামী সৌরভ দত্তের সহযোগিতা পেয়েছেন ৷ না পেলে তার এইভাবে চাকরি করা হয়তো সম্ভব হতো না। বলে জানান চন্দ্রিমা ৷ এই প্রসঙ্গেই সৌরভ দত্ত বলেন, "কারও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেটা হয়তো চিকিৎসা করে সারানো সম্ভব। কিন্তু কেউ মনের দিক দিয়ে যদি প্রতিবন্ধি হয় তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়। চন্দ্রিমার মন স্বচ্ছ এবং সুন্দর। ওর মনের মত মানুষ আমি পাইনি। তাই ওকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। আমিও ওর পাশে থাকছি। এভাবেই আমরা চলছি।"
স্কুলেও নানান সহযোগিতা পেয়েছেন চন্দ্রিমা। তাঁর জন্য বিশেষ ক্লাস রুম দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরাই সেই ক্লাস রুমে আসেন চন্দ্রিমার কাছে পাঠ নিতে।

আরও পড়ুন:

  1. প্রধানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ, সরব গ্রামবাসীরা
  2. আগুনের পরশমণি ছুঁয়ে 'বাংলাকে বাংলা' করার লক্ষ্যে রাজনীতির ময়দানে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ
  3. ভোটে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা, পুরনো মামলায় জামিন নিতে আদালতে অগ্নিমিত্রা!
Last Updated : Mar 8, 2024, 11:15 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details