কলকাতা, 13 জুলাই: নতুন তারার খোঁজে আজ ডার্বিতে চোখ রাখবেন প্রাক্তন ফুটবলাররা ৷ 13 জুলাই শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কলকাতা ডার্বিতে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ৷ ডার্বির একশ বছরে শনিবারের ম্যাচটি অনেক দিক থেকে অনন্য ৷ প্রথম ডার্বিতে দুই দলের বাইশ জন ফুটবলার ছিলেন ভারতীয় ৷ ডার্বির একশ বছরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ৷
ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ (ইটিভি ভারত) 1925 সালের 28 মে প্রথম ডার্বিতে নেপাল চক্রবর্তীর গোলে জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল ৷ সেদিনের নায়ক নেপাল চক্রবর্তীর পরিবার এখন থাকেন গড়িয়ায় ৷ নেপাল চক্রবর্তীর দুই মেয়ে এবং এক ছেলে ৷ ছেলে দীপক চক্রবর্তী বলছিলেন, "আমার বাবা আজীবন লাল-হলুদের সমর্থক ছিলেন ৷ কলকাতা থেকে জামশেদপুরে চলে গিয়েছিলেন ৷ সেখানেও ফুটবল চর্চা চালু ছিল ৷ কলকাতায় খেলতে আসতেন ৷ একটি ম্যাচে সাহেব ফুটবলার তলপেটে লাথি মারায় ঠাকুমা বাবাকে খেলা ছেড়ে দিতে বলেন ৷ তারপর থেকে তিনি খেলা ছেড়ে দেন ৷ আইএফএ আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সম্মানিত ৷ তবে, এই উদ্যোগটা ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নিলে আরও ভালো লাগত ৷"
ডার্বি মানেই নতুন তারার উত্থান ৷ বাইশ জন ভারতীয় ফুটবলার মাঠে নামবেন ৷ বাংলার দুই প্রাক্তন সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় এবং দীপেন্দু বিশ্বাস নতুন তারার উত্থানের আশায় ৷ একই সঙ্গে স্মৃতিমেদুর ৷ সংগ্রাম মুখোপাধ্যায় বলেন, "অরুণ ঘোষ আমাকে ময়দানে নিয়ে এসেছিলেন ৷ ডার্বির মাহাত্ম্য নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম ৷ বলেছিলেন খেললে বুঝতে পারবি ৷ খেলার পর বুঝেছিলাম, কেন সব ম্যাচের সেরা বাঙালির ডার্বি ৷"
দীপেন্দু বিশ্বাসের কাছে ডার্বি প্রতিষ্ঠা পাওয়ার ম্যাচ ৷ তিনি বলেন, "বসিরহাট থেকে কয়লার ইঞ্জিনে চড়ে কলকাতায় আসতাম ৷ প্রথম ট্রেন ধরে আসতে হত ৷ শিয়ালদা নেমে ট্রাম বা বাসে চেপে ধর্মতলায় আসতাম ৷ তারপর হেঁটে ফেডারেশনের মাঠে প্র্যাকটিসে যেতাম ৷ 1997 সালের 13 জুলাই মোহনবাগানের দলে ছিলাম ৷ কিন্তু, চোট থাকায় কোচ অমল স্যার নামাননি ৷ ফলে গ্যালারিতে বসে ম্যাচটা দেখেছিলাম ৷ মোহনবাগান পর্যুদস্ত হয়েছিল ৷ আমি ফিরেছিলাম রুমালে মুখ ঢেকে ৷ যাতে ট্রেনে-বাসে চিনতে না পারে ৷"
প্রায় একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, "ওই রাতেই অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল আমার সঙ্গে ৷ রাত দেড়টার সময় অমল স্যার আমাকে লোক পাঠিয়ে তুলে নিয়ে এসেছিলেন ৷ মোটর বাইকে দু’জন তুলে নিয়ে এসেছিল ৷ পরের দিন থেকে প্র্যাকটিসে বাড়তি সময় দিতেন হেড অনুশীলন করার জন্য ৷ এইভাবে মাসখানেক পরের ডার্বিতে আঠারো জনের দলে জায়গা পাই ৷ সেবারও লক্ষাধিক লোক হয়েছিল ৷ সেই ডার্বিতে বাসুদেব মণ্ডলের সেন্টার থেকে আমার হেড এবং গোল ৷ তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ৷" ডার্বির টিকিটের আহামরি চাহিদা রয়েছে বলে কেউ দাবি করছে না ৷ তবে, চাপা আগ্রহ রয়েছে ৷ আগ্রহ রয়েছে নতুন তারার উত্থানের সাক্ষী হওয়ার ৷