হায়দরাবাদ, 23 সেপ্টেম্বর:কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী দাসের আত্মহত্যার চেষ্টা আরও একবার নাড়িয়ে দিয়েছে টলিপাড়াকে ৷ প্রতিবাদে সরব একাধিক তারকা শিল্পী ৷ ডিরেক্টর্স গিল্ডের তরফে সোমবার সাড়ে 6টায় রাখা হয়েছে এক প্রেস কনফারেন্স ৷ তার আগে নিজেদের অবস্থান সোশাল মিডিয়ায় স্পষ্ট করেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ৷
এদিন ডিরেক্টর্স গিল্ডের বিবৃতির লেখা কিছুটা এই রকম....
- এ রাজ্যের সকল সিনেমাকর্মী, টেলিভিশনকর্মী, ওটিটি, শর্ট ফিল্ম, বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও আমাদের কাজের যারা দর্শক, সেই নাগরিক সমাজকে কিছু কথা জানানোর খুবই দরকার। জল অনেকদিন ধরেই বাড়ছে, এখন বিপদ ঘন্টা বেজে গেছে, রাজ্যের গ্রামাঞ্চলেও, আমাদের কর্মস্থলেও।
- আমাদের সহকর্মী এক কেশ বিন্যাস শিল্পী কাল রাতে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। কারণ, তিনি ফেডারেশন( FCTWEI) ও ফেডারেশন অন্তর্ভূক্ত ওঁর গিল্ড সিনে এন্ড ভিডিও হেয়ার স্টাইলিস্ট এসোসিয়েশন এর গনতান্ত্রিক পদ্ধতি নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলায় তাঁকে কাজ থেকে আড়াই মাস মতো সাসপেন্ড করা হয়, তাঁর প্রাক্তন স্বামী অসুস্থ হওয়ায় তিনি তাঁর শুশ্রুষার ভার নেন, তিনি একাই তাঁর ছোট মেয়ের কলেজের পড়াশুনো চালান কাজ করে, এই সাসপেনশনের ফলে পরিবার দেনাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
'থ্রেট কালচার ইজ নিউ কালচার', কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহননের চেষ্টায় সরব টলিউড
- আমাদের সহকর্মী একটি সুইসাইড নোট লেখেন, তাতে নিজের এই চরম সিদ্ধান্তের জন্য যাদের দায়ী করেন,তারা প্রায় প্রত্যেকেই সিনে ও ভিডিও হেয়ার স্টাইলিস্ট এসোসিয়েশন এর সদস্য ও পদাধিকারী। আমরা, ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা সকলেই জানি, ফেডারেশন এর আওতায় এই ২৬ টি আলাদা গিল্ড আদপে পাপেট, ফেডারেশনের মূল কার্যকরী কমিটির অঙ্গুলিহেলনে ও চাপে তারা এই সমস্ত ভ্রান্ত, আইন বিরুদ্ধ, খাপ পঞ্চায়েত সুলভ অনৈতিক, নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে বাধ্য থাকেন।
- এই দাদাদের আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে: কারা বা কী এই ফেডারেশন। অত্যন্ত জরুরি এক সংগঠন। ট্রেড ইউনিয়ন। যারা বিনোদন শিল্পের কলাকুশলীদের কাজ করে টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তার, কাজের পরিবেশের, সম্মানের ও স্বাস্থ্যের স্বার্থে কাজ করেন। যাকে ছোট করে ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন (welfare organisation) বলা চলে। সংসদীয় ব্যবস্থাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পাড়ার ক্লাব বা আপিস চালানোর কায়দায় তারা দিনের পর দিন এই কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছেন। সম্পূর্ণ আইনি এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে। কীভাবে?গায়ের জোরে, ক্ষমতার জোরে, বেআইনি উপায়ে ৷
- আমাদের সহকর্মী মর্মান্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তাই আমাদের শঙ্কা স্বাভাবিক ৷ কিন্তু এরকম ঘটনা নতুন নয়। যে দম বন্ধ করা, কুৎসিত, নিরাপত্তাহীন ও হিংস্র পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে কতিপয় কমিটি মেম্বারদের মৌরসি পাট্টা বজায় রাখতে, তাদের ক্ষমতা ও খামখেয়ালীপনাকে তুষ্ট করতে, তা এই ইন্ডাস্ট্রিতে শিল্প নির্মাণের পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে। যাদের সিদ্ধান্তে এই ঘটনা ঘটল, সত্ত্বর তাদের অপসারণ আমরা চাই । চাই সমস্ত বেআইনি নিয়ম বাতিল হোক। আমরা চাই, আমাদের কর্মক্ষেত্র ভয়হীন হোক। পক্ষপাত মুক্ত হোক, তুঘলকী শাসনের অবসান হোক।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন, কেমন আছেন কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী?