ওয়েনাড়, 12 নভেম্বর: পঁচিশ বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ভোটের ময়দানে আসতে এখনও অনেক অনেক দেরি ৷ সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হয়েছে ৷ জীবনের প্রথম নির্বাচন লড়ছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজীব-তনয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা ৷ রাত পোহালে তাঁর ভাগ্য পরীক্ষা ৷ এখানে আরেকটি প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই উঠে আসে, ভোট ময়দানে 'প্রিয়াঙ্কা-ম্যাজিক' কংগ্রেসকে আরও গান্ধি-মুখাপেক্ষী করে তুলল না তো ?
কখনও মা সোনিয়া গান্ধি তো কখনও দাদা রাহুল গান্ধির জন্য দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ- তাঁকে প্রচারে দেখা গিয়েছে ৷ এবার প্রিয়াঙ্কা নিজেই প্রার্থী ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনীতিতে কংগ্রেসের গুরুত্ব বদলেছে ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস 99টি আসনে জয়ী হয়ে বিরোধী দলের আসন পেয়েছে ৷ এই নির্বাচনের নেপথ্যে ছিল জোট রাজনীতির রণকৌশল ৷
2019 সালে ওয়েনাড় থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন রাহুল গান্ধি, যা রেকর্ড গড়েছিল ৷ সেবার অবশ্য আমেঠি লোকসভায় তিনি পরাজিত হয়েছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে ৷ তাই গান্ধি পরিবারের কাছে ওয়েনাড়ের গুরুত্ব কিছুটা অন্যরকম, বলাই যায় ৷ 2024 সালে এই কেরলের ওয়েনাড় এবং উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি- দু'টি আসনেই জয়ী হন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল ৷ পরে ওয়েনাড় থেকে ইস্তফা দেন তিনি ৷ তবে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে ৷
22 অক্টোবর রাতে মা সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে ওয়েনাড়ে পৌঁছন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা ৷ পরদিন 23 অক্টোবর দাদা রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে মেগা রোড শো করে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৷ ওয়েনাড়ের রাস্তায় ওই রোড শোতে স্ত্রীর পাশেই দেখা গিয়েছে রবার্ট বঢরা, ছেলে রাইহানকেও ৷ প্রিয়াঙ্কা জনসভা থেকেই বলেছিলেন, "নির্বাচনে আমি এই প্রথম ৷ কিন্তু, 35 বছর ধরে প্রচার চালিয়েছি ৷"
1999 সালে মা সোনিয়া গান্ধির হয়ে লোকসভা ভোটের প্রচারে তিনি নজর কেড়েছিলেন ৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র 27 ৷ কর্ণাটকের খনি অঞ্চল বেলারিতে প্রচারের সময় তিনি স্পষ্ট করেছিলেন ৷ এখনই ভোটের রাজনীতিতে নয়, এখনও অনেকটা পথ যাওয়া বাকি ৷ সেই কথা রেখে ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা ৷ সোমবার তাঁর নির্বাচনী প্রচার শেষ হয় রোড শো-এর মাধ্যমে ৷ পাশে ছিলেন দাদা রাহুল ৷
নির্বাচনী প্রচারে ওয়ানাড়ের সঙ্গে কংগ্রেস পরিবারের আবেগঘন সম্পর্কের উপরই জোর দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা ৷ তাঁর উপস্থিতি কংগ্রেসের একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মনের জোরও বাড়িয়েছে ৷ কালপেট্টার কংগ্রেস বিধায়ক টি সিদ্দিকি বলেন, "প্রচারে সব স্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি ৷" তাঁর এই থাকাটা কংগ্রেসের নিচু স্তরের মানুষের মনে আশা জাগিয়েছে, শক্তি দিয়েছে ৷ বিধায়ক আরও বলেন, "তিনি (প্রিয়াঙ্কা) মনে করিয়ে দিয়েছেন যে এখানে তিনি শুধু প্রার্থী নন ৷ তাঁর বাবা রাজীব গান্ধির ধারা বহন করে চলেছেন, পরিবারের এক সদস্য ৷"