মুম্বই, 15 ফেব্রুয়ারি: নির্বাচন কমিশন আগেই অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীকে ‘আসল এনসিপি’ বলে ঘোষণা করেছিল ৷ এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ রাহুল নারওয়েকরও একই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ৷ বৃহস্পতিবার তিনি অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীকে 'আসল এনসিপি' হিসাবে ঘোষণা করেছেন । একই সঙ্গে জানিয়েছেন যে অজিত পাওয়ারের গোষ্ঠীর বিধায়করা অযোগ্য নন । ফলে অজিত পাওয়ারের সঙ্গে যে 43 জন বিধায়ক ও ছ’জন বিধান পরিষদের সদস্য় এসেছিলেন, তাঁদের পদ খারিজ হল না ৷
এ দিন রায় দেওয়ার সময় মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার রাহুল নারওয়েকর বলেন, "বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণার জন্য সমস্ত আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে ৷ এনসিপির এই ঘটনায় রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা সংবিধানের দশম তফসিলের অপব্যবহার স্পষ্ট হয়েছে ৷ শরদ পাওয়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা বা তাঁর ইচ্ছাকে অস্বীকার করা দলত্যাগের সমান নয় । বিধায়কদের বড় অংশকে পদচ্যূত করার হুমকি দিয়ে কোনও দলই সংবিধানের দশম তফসিলের বিধানের অপব্যবহার করতে পারে না ৷’’
এ দিন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ এনসিপি সংক্রান্ত মোট পাঁচটি আবেদনের রায় দেন ৷ এই পাঁচটি আবেদনের মধ্যে তিনটি শরদ পাওয়ার শিবির থেকে দেওয়া হয়েছিল ৷ দু’টি আবেদন এসেছিল অজিত পাওয়ারের শিবির থেকে ৷ এই নিয়ে রায় দিতে গিয়ে রাহুল নারওয়েকর আরও উল্লেখ করেছেন যে শরদ পাওয়ার গোষ্ঠীকে অযোগ্য ঘোষণা করা যাবে না ।
তবে কেউই শরদ পাওয়ারকে নিয়ে টানাটানি করেননি ৷ উভয়পক্ষই শরদ পাওয়ারকেই নিজেদের সভাপতি বলে দাবি করেছিলেন ৷ এর প্রেক্ষিতে এ দিন নারওয়েকর জানান, এনসিপির সভাপতি কে হবেন, তা তিনি ঠিক করতে পারেন না । 1999 সালে শরদ পাওয়ারের তৈরি করা দল এনসিপি-তে 2023-এর 23 জুন এনসিপি-তে একটি বিভাজন হয়েছিল ৷ তার আগে পর্যন্ত কোনও বিরোধ ছিল না ৷
উল্লেখ্য, গত বছর জুনের শেষে অজিত পাওয়ার আচমকা এনসিপি-র বিধায়কদের একটা অংশকে নিয়ে মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিবসেনা সরকারে যোগ দেন ৷ তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন৷ তাঁর সঙ্গে প্রফুল প্যাটেল, ছগন ভুজবলের মতো নেতারাও চলে আসেন ৷ এই নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়৷ দু’পক্ষে বিপক্ষ শিবিরের বিধায়কদের পদ খারিজে আবেদন করেন ৷ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে ৷ শীর্ষ আদালত এই নিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেয় ৷ সেই মতো বৃহস্পতিবার রায় দিলেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ রাহুল নাওরেকর ৷
এর আগে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের জেরে আগেই ধাক্কা খেয়েছেন এনসিপি-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শরদ পাওয়ার ৷ এবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তে নতুন করে বিপাকে পড়তে হল এই মারাঠা রাজনীতিক ও তাঁর অনুগামীদের ৷ কমিশনের সিদ্ধান্তের জেরে শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত এনসিপির নাম ও প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছেন ৷ শরদ পাওয়ার শিবিরের নতুন নাম হয়েছে এনসিপি (শরদ চন্দ্র পাওয়ার) ৷ যদিও কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শরদ পাওয়ার শিবির ৷
আরও পড়ুন:
- এনসিপি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে শরদ পাওয়ার শিবির
- বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কদের পদ খারিজ নিয়ে 'সুপ্রিম' নির্দেশ, সিদ্ধান্ত নিতে হবে 15 ফেব্রুয়ারির মধ্যে
- এনসিপি-তে কোনও বিভাজন নেই, অজিতরা ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন; মন্তব্য পাওয়ারের