নয়াদিল্লি, 26 জানুয়ারি: ফের একবার বিজেপির হাত ধরতে চলেছে জেডিইউ ? গত 24 ঘণ্টায় বিহারের রাজনীতিতে সেই হাওয়া বদলের গুঞ্জন ৷ বর্তমান জোট সরকার জেডিইউ ও আরজেডির মধ্যে শুরু হওয়া দ্বৈরথে তেমনই ইঙ্গিত ৷ আর সেই সুযোগে বিহারে গদি উলটানোর পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে এনডিএ শিবির ৷ সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের খবর অনুযায়ী, এলজেপি সভাপতি চিরাগ পাসওয়ান এবং বিহার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসেছে ৷
এনএনআইয়ের খবর অনুযায়ী, লোকসভা ভোটের আগে নীতীশ কুমারকে এনডিএ জোটে ফেরাতে বিহার নেতৃত্বকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং অমিত শাহ ৷ আর সেই চেষ্টাতেই চিরাগ পাসওয়ান তাঁর 26 জানুয়ারির সব কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছেন ৷ জানা গিয়েছে, বিহারে এলজেপির জাতীয় কার্যালতে সকাল থেকে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন চিরাগ পাসওয়ান ৷ তাঁর কাছে দিল্লি থেকে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের ফোনও নাকি এসেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে, বিজেপি বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটে ফের একবার ভাঙনের আশংকা ৷ বলা হচ্ছে, জেডিইউ তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের এনডিএ শিবিরে সামিল হওয়া সময়ের অপেক্ষা ৷
সেক্ষেত্রে নীতীশ কুমার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন ? নাকি বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝতায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব হাতছাড়া করবেন ? সেটাই এখন দেখার ৷ কারণ, 2022 সালে নীতীশের এনডিএ ছেড়ে মহাগটবন্ধনের অংশ হওয়ার একমাত্র কারণ ছিল মুখ্যমন্ত্রিত্ব ৷ সেই শর্তেই আরজেডির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করেছিলেন ৷ কিন্তু, দেড়বছরের মধ্যে ফের একবার নীতীশের মুখ্যমন্ত্রিত্ব বাঁচানোর তাগিদ দেখা দিয়েছে বলে বিহারের রাজনৈতিকমহলে গুঞ্জন ৷ কারণ, এবার স্বয়ং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, এ নিয়ে গতকাল আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিনী আচার্য বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন সোশাল মিডিয়ায় ৷ যেখানে তিনি নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার লোভে দলবদলের নেশার অভিযোগ তুলেছিলেন ৷ যদিও, সেই পোস্ট কয়েকঘণ্টার মধ্যে ডিলিট করে দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে, নাম না করে রাজনীতিতে পরিবারের সদস্যদের এগিয়ে দেওয়ার অভিযোগে, বুধবার লালুপ্রসাদ তথা আরজেডিকে তুলোধনা করেছিলেন নীতীশ ৷ বিহারের জননায়ক কর্পুরী ঠাকুরের একশো বছরের জন্মজয়ন্তী উৎসবে গিয়ে, তাঁকে আদর্শ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জেডিইউ প্রধান ৷
কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, কর্পুরী ঠাকুর নিজের পরিবারকে কখনও রাজনীতির মঞ্চে তুলে ধরেননি ৷ সেই কারণেই নীতীশ কুমার কারপুরী ঠাকুরকে নিজের রাজনৈতিক আদর্শ মানেন ৷ আর তাই নিজের পরিবারের সদস্যদেরও কখনও জেডিইউতে তুলে আনেননি বলে জানান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ৷ উল্লেখ্য, এদিন বিহারের এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এইএএম প্রধান জিতেন রাম মাঝি বলেন, "বিহারের এই মহাগটবন্ধনের সরকার আর টিকবে না ৷"
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তিও দেন তিনি ৷ জিতেন রাম মাঝি বলেন, "সম্প্রতি আমি বলেছিলাম 20 জানুয়ারি পর বিহারের রাজনীতির সমীকরণ বদলে যাবে ৷ আর সেই কথা আমি বলেছিলাম নীতীশ কুমারের কিছু মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ৷ উনি আরজেডির বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছিলেন ৷ আর তার ভিত্তিতে আমরা বলেছিলাম যে, এই জোট আর কাজ করবে না ৷ তাঁদের জোট দীর্ঘস্থায়ী হবে না ৷ নীতীশ কুমারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছে ৷ তাই জোট ভেঙে বেরিয়ে এসে লোকসভা নির্বাচনে আলাদা লড়বেন অথবা অন্য কোনও জোটের হাত ধরবেন ৷" আর নীতীশের এমনটা করার পিছনে তাঁর ক্ষমতার শীর্ষে থাকার প্রবল ইচ্ছেকে দায়ী করেছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন:
- জ্যোতি বসুর পঞ্চায়েতি রাজ ও পৌর আইনের প্রশংসা নীতীশের, ভিডিয়ো বার্তা তেজস্বীরও
- বিজয়ন-ইয়েচুরিদের সঙ্গে এবার একমঞ্চে থাকবেন মমতার ‘বন্ধু’ নীতীশও
- নীতীশের জেডিইউ প্রধান হওয়ায় 'ইন্ডিয়া' জোট প্রভাবিত নয়, দাবি কংগ্রেসের