রায়গঞ্জ, ৩০ মার্চ: শিক্ষকদের মারধর ও স্কুলে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল এক ছাত্রীর অভিভাবকদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন এক শিক্ষক। তাঁকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটি ইসলামপুর মহকুমার গোয়ালপোখরের নন্দঝাড় হাই স্কুলের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় গোয়ালপোখর থানার পুলিশ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ অধিকারীর অভিযোগ, "শিক্ষকদের যখন মারধর করা হচ্ছিল, তখন নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ।"
গতকাল স্কুলে খেলার সময় এক ছাত্রের ব্যাটের আঘাত লাগে সীমা মার্ডি নামে এক ছাত্রীর মাথায়। সীমা ক্লাস এইটে পড়ে। তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, আজ সকালে ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন এসে স্কুলে ভাঙচুর চালায়। শিক্ষকদের মারধর করে। এর জেরে গুরুতর জখম হয়েছেন এক শিক্ষক। তিনি ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে স্কুলের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করেছে ওই ছাত্রীর পরিবার। তাদের অভিযোগ, আহত হওয়ার পর সিমাকে স্কুলেই বসিয়ে রেখেছিল শিক্ষকরা। পরে তাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, পুলিশের সামনে শিক্ষকদের পেটানো হলেও তারা নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি বলেন, "ওই ছাত্রীর ঠিক মতো চিকিৎসা হয়েছে। তা সত্ত্বেও শিক্ষকদের মারধর করা হল।"
এলাকার আদিবাসী সংগঠনের নেতা নরেশ হাঁসদা বলেন, "বেলা ২টো নাগাদ এক ছাত্রীর মাথায় আঘাত লাগে। ছাত্ররা খেলছিল। তখনই দুর্ঘটনাবশত এক ছাত্রের ব্যাটের আঘাত লাগে ওই ছাত্রীর মাথায়। রক্তক্ষরণ শুরু হয়। শিক্ষকরা ওই ছাত্রীকে নিয়ে যান। ঘরে বন্ধ করে রাখেন। সেই সময় শিক্ষকরা কেউ খাচ্ছিলেন। কেউ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু ওই ছাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাননি। দুই ঘণ্টা পরে ঘটনাটি অভিভাবকরা জানতে পারলে তাঁরা স্কুলে আসেন। তারপরে ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই কারণেই আদিবাসী মহলের ক্ষোভ। আমরা আমাদের শিশুকে পড়াশোনার জন্য স্কুলে পাঠাই। শিক্ষকরা সঠিক দায়িত্ব না পালন করলে কী করে বিশ্বাস করব স্কুলকে? আমরা চাই শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো হোক। ভালো পরিষেবা থাকুক। তবে আমাদের কোনও লোক ভাঙচুর করেনি। এখানে অনেক লোক ছিল। কে করেছে জানি না। শিক্ষকরা ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ঘটনার কথা জানতেন। ওরা যদি ওই ছাত্রীর প্রতি একটু সহানুভূতি দেখাতেন তবে এইরকম ঘটনা ঘটত না।"
ভিডিয়োয় শুনুন নরেশ হাঁসদা ও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য