রায়গঞ্জে অধীরের নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল রায়গঞ্জ, 30 এপ্রিল: কালিয়াগঞ্জ-সহ সারা রাজ্যে জুড়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ ৷ রাজবংশী ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের উপর তৃণমূল ও পুলিশ প্রশাসনের অত্যাচার ৷ সাধারণ মানুষদের তদন্তের নামে পুলিশের তরফে হেনস্তার অভিযোগ তুলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হল রবিবার । উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ পলিটেকনিক কলেজের সামনে থেকে এই মিছিল শুরু হয় । রায়গঞ্জ শিলিগুড়ি মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ হয় । মিছিলে অধীর চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব ।
উল্লেখ্য, এক কিশোরীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা এলাকা । পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে যথেচ্ছভাবে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাতে হয়েছে । পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রামবাসীরা ইটবৃষ্টি করে । জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একটি গুমটি ঘর । পুলিশ কিশোরীর দেহটিকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে । গত মঙ্গলবার ওই কিশোরী খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালিয়াগঞ্জ থানায় ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে ৷ সেই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিষ্ণু বর্মনের বিরুদ্ধে ।
বিষ্ণু বর্মনের বাড়ি কালিয়াগঞ্জ থানার রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁ গ্রামে । তাদের বাড়িতে বিয়ে ছিল ৷ সেই বিয়েতে জামাই সুব্রত বর্মন, কাকাতুতো ভাই মৃত্যুঞ্জয় বর্মনও এসেছিলেন । বুধবার বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ ফুর্তি করে রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে । চাঁদগাঁ গ্রাম বাংলাদেশ সীমান্তবর্তি এলাকায় । বুধবার অধিকরাতে পুলিশ আসে পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য বিষ্ণু বর্মনকে গ্রেফতার করতে । বাড়িতে ছিলেন না বিষ্ণু বর্মন । বিষ্ণুকে না পেয়ে তাঁর বাবা এবং বোনের বর সুব্রত বর্মনকে গাড়িতে তুললে যায় পুলিশ ৷ তাতে এলাকার মানুষ আপত্তি জানায় । গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করে ঘটনার । সেই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয় বর্মন । অধিকরাতে পুলিশ বিক্ষোভের মুখে পড়ে গ্রামবাসীদের ।
কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল রায়গঞ্জে অবস্থার বেগতিক দেখে পুলিশ দুই রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ । একটি গুলি মৃত্যুঞ্জয়ের বুকে লাগে । পুলিশ গুলিবিদ্ধ মৃত্যঞ্জয়কে ফেলেই বিষ্ণুর বাবাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় বলে অভিযোগ । এরপর গ্রামবাসীরা গুলিবিদ্ধ মৃত্যুঞ্জয়কে নিয়ে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । কালিয়াগঞ্জের কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুন এবং রাধিকাপুরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মন নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার এলাকায় গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী । কংগ্রেস এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে । তারই অংশ হিসাবে রবিবার রায়গঞ্জে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হল ।
আরও পড়ুন:বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে পদযাত্রা সিপিআইএমের