পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

mothers body recovered : দুই শিশু সন্তান-সহ মায়ের দেহ উদ্ধার - chakla panchayet

পারিবারিক অশান্তির জের ৷ দু‘বছরের মেয়ে এবং পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী মহিলা না কি খুন করে তা ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যার গল্প সাজাতে চাইছেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ? মহিলার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পারিবারিক অশান্তির জের
পারিবারিক অশান্তির জের

By

Published : Jul 31, 2021, 4:33 PM IST

দেগঙ্গা, 31 জুলাই : পারিবারিক অশান্তির জেরে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন মহিলা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। যদিও মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে ৷

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম সোনামণি ঘোষ (২৪)। তার দু'বছরের মেয়ে বৃষ্টি এবং পাঁচ বছরের ছেলে বুবাই। শুক্রবার বাড়ির কাছে একটি পুকুর থেকে এই তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আত্মঘাতী হওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ মৃত মহিলার বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, খুন করে তা ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যার গল্প সাজাতে চাইছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তবে, খুন না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার হবে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা। মহিলার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাত বছর আগে দেগঙ্গার নুরনগর পঞ্চায়েতের গাম্ভিরগাছির বাবুলাল ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় সোনামণির। তাঁর বাপের বাড়ি চাকলা পঞ্চায়েতের সিরাজপুর ঘোষপাড়ায়। ওই দম্পতির দু‘টি সন্তান রয়েছে। মেয়ের বয়স 2 বছর এবং ছেলের বয়স ৫ বছর।

আরও পড়ুন : water logged deganga : নিকাশি নালা বন্ধ, বৃষ্টির জমা জলে অসহায় দেগঙ্গার বাসিন্দারা

অভিযোগ, বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। এনিয়ে মহিলার উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চলত বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মহিলাকে চাপও দেওয়া হত। স্বামীর এই কাজে মহিলার শাশুড়িও মদত জোগাতেন বলে অভিযোগ। টাকা আনতে না পারলে তাঁকে প্রতিনিয়ত গঞ্জনা শুনতে হত শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছ থেকে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে প্রাইভেট টিউশনের জন্য ছেলে বুবাইকে নিয়ে যান সোনামনি। সঙ্গে ছিল তাঁর মেয়ে বৃষ্টি। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি কেউই।

পরিবারের লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও হদিস পাওয়া যায়নি তাদের। বিষয়টি জানানো হয় দেগঙ্গা থানায়।

এরপরই শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি পুকুরে ওই তিনজনের দেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় হতবাক সকলে।

আরও পড়ুন : Snake Bite-Superstition : সাপে কাটাকে নিয়ে ওঝার বাড়ি, দেগঙ্গায় কুসংস্কারের বলি ব্যক্তি

এই বিষয়ে মৃতার ভাই দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, "বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মাঝেমধ্যেই চাপ দেওয়া হত দিদিকে। তাছাড়া পারিবারিক অশান্তির জন্য দিদিকেই দায়ী করে তাঁর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতেন স্বামী ও শাশুড়ি। তাই, আমাদের সন্দেহ দিদি,ভাগ্নে ও ভাগ্নিকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই খুন করে পুকুরে ভাসিয়ে দিয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাইছি আমরা ৷"

যদিও খুনের অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। উল্টে মহিলা মানসিক রোগী ছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিষয়টি নিয়ে দেগঙ্গা থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ পেয়ে মহিলার স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ABOUT THE AUTHOR

...view details