তৃণমূল মুখপাত্র পরিচয় দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় বারাসত, 5 জানুয়ারি: কখনও নিজেকে তৃণমূলের মুখপাত্র, কখনও আবার আইনজীবী (Lawyer) পরিচয় দিয়ে লোক ঠকানোর কাজ দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এইভাবে লোক ঠকিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণাও করেছিলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। সেই প্রতারককে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন আইনজীবীরা। প্রতারণার অভিযোগে রাজীব চৌধুরী ওরফে আনিসুর রহমান নামে ওই ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করেছে বারাসত থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার পিছনে অন্য কারও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, রাজীব চৌধুরী নামে নিজেকে পরিচয় দিলেও ওই ব্যাক্তির আসল নাম আনিসুর রহমান। নিউটাউনে অভিযুক্তের একটি ল-ফার্ম রয়েছে বলে পুলিশি জেরায় জানিয়েছে সে। সেখান থেকেই জালিয়াতির যাবতীয় কারবার তিনি চালাতেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারণা করার আগে ওই ব্যক্তি বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে থাকা মানুষজনকে টার্গেট করতেন। প্রশাসন কিংবা সরকারি স্তরে সেই সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগও উঠেছে।
আরও পড়ুন:বারুইপুরে পানা পুকুরে মিলল আইনজীবীর দেহ
আর এই প্রতারণা করতে গিয়ে কখনও ওই ব্যাক্তি নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র বলে, আবার কখনও পরিচয় দিয়েছেন বারাসত আদালতের একজন আইনজীবী বলে। সম্প্রতি, আইনি জটিলতার মুখে পড়ে নিলয় দত্ত নামে এক ব্যাক্তি যোগাযোগ করেন রাজীব চৌধুরীর সঙ্গে। তাঁকেও সে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে 50 হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। পরে খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন ওই ব্যাক্তি ভুয়ো আইনজীবী এবং একজন বড়সড় প্রতারক। আগেও সে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে জালিয়াতি করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেই কারণে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে বাগুইআটি, রাজারহাট, নিউটাউন-সহ বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় (Accused Arrested for Extortion)।
প্রতারিত ব্যাক্তির অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়ে ওঠে উত্তর 24 পরগনা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার রাতে বারাসত আদালত চত্বর থেকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় প্রতারক ওই ব্যাক্তিকে। এরপর, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদের হাতে ওই প্রতারককে তুলে দেন আইনজীবীরা। এই বিষয়ে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও আইনজীবী অলোক সমাজপতি বলেন, "আইনজীবী পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি বিভিন্ন কায়দায় প্রতারিত করতেন সাধারণ মানুষকে। এভাবে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। ভুয়ো আইনজীবী চিহ্নিত করতে আমরা সবসময় তৎপর রয়েছি। এখনও পর্যন্ত বারাসত আদালতে সেরকম কিছু পায়নি।"
আরও পড়ুন:চাকরি দেওয়ার নামে 17 লাখ টাকা আত্মসাৎ ! সরকারি আইনজীবীরর নামে অভিযোগ থানায়
প্রতারিত নিলয় দত্ত বলেন,"এক পরিচিতের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল রাজীব চৌধুরীর সঙ্গে। জামিন করিয়ে দেওয়ার নামে আমার কাছ থেকে সে অগ্রিম 50 হাজার টাকা নেয়। পরে জানতে পারি তিনি একজন বড়সড় ঠগবাজ। এখানকার আইনজীবীরা সহযোগিতা করায় আমি আমার 50 হাজার টাকা ফিরে পেয়েছি। এজন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।" অন্যদিকে, ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিতে বৃহস্পতিবার তাকে বারাসত আদালতে পেশ করেছে পুলিশ।