ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক
শুভাশিস মার্ডি 2017 সালে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। প্রায় সাত মাস আগে স্থানীয় মধুপুর এলাকায় এক যুবতীর সঙ্গে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে শুভাশিস। এরপর লকডাউন পরে যাওয়ায় অনুষ্ঠান করে বিয়ে আর সম্ভব হয়নি। সব কিছু স্বাভাবিক হলে ধুমধাম করে বিয়ে করার কথা ছিল। এদিকে তার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিগত কয়েক মাস ধরে শ্বশুর বাড়িতে থাকত শুভাশিস।
বালুরঘাট, 11 সেপ্টেম্বর: ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক । মৃত ওই স্কুল শিক্ষকের নাম শুভাশিস মার্ডি (32)। বাড়ি চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চক আন্ধারু এলাকায়।
ওই যুবক কুমারগঞ্জ সার্কেলের সফরপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। গতকাল গভীর রাতে শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালীন ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী হন। বিষয়টি তাঁর সহকর্মীদের নজরে এলে তারা ফোন করে তাকে বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করেন। তবে কারও ফোন ধরেননি তিনি। অবশেষে আজ সকালে দরজা ভেঙ্গে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পরিবারের লোকেরা ।
এদিকে শুক্রবার সকালে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান তার সহকর্মী ও পরিবারে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
জানা গেছে, শুভাশিস মার্ডি 2017 সালে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। প্রায় সাত মাস আগে স্থানীয় মধুপুর এলাকায় এক যুবতীর সঙ্গে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে শুভাশিস। এরপর লকডাউন পরে যাওয়ায় অনুষ্ঠান করে বিয়ে আর সম্ভব হয়নি। সব কিছু স্বাভাবিক হলে ধুমধাম করে বিয়ে করার কথা ছিল। এদিকে তার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিগত কয়েক মাস ধরে শ্বশুর বাড়িতে থাকত শুভাশিস। মাঝে মধ্যে তার নিজের বাড়িতে যেত সে।
গতকাল রাত একটা নাগাদ হঠাৎ ফেসবুক লাইভে আসে শুভাশিস। এরপরই গলায় গামছা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে থাকে। বিষয়টি নজরে আসতে তার সহকর্মীরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। খবর দেওয়ার চেষ্টা করে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের। তবে সবরকম চেষ্টা বিফলে যায়। অবশেষে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে শুভাশিস।
মৃতের দাদা দেবাশিস মার্ডি জানান," মাস কয়েক আগে ভাই রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন। তবে লকডাউন থাকায় তারা অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিতে পারেননি। এদিকে তার ভাইয়ের শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকত সে। গত শনিবার নিজের বাড়িতে এসেছিল মাকে দেখতে। ভাই রাত জেগে পড়াশোনা করত। এজন্য রাতে কেউ তাকে ডিস্টার্ব করত না। তার স্ত্রীও অন্য ঘরে থাকত। আজ সকালে জানতে পারি ভাই ফেসবুক লাইভ করে আত্মঘাতী হয়েছে।"
অন্যদিকে সহকর্মী রাকেশ কুণ্ডু জানান, ২০১৭ সালে সফরপুর প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগদান করে। গতকাল গভীর রাতে হঠাৎই দেখেন ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে শুভাশিস। বিষয়টি দেখেই সে তার অন্যান্য সহকর্মীদের জানান। এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। একাধিকবার ফোন করেন শুভাশিসকে। তবে সে ফোন ধরেনি। চোখের সামনে মারা যেতে দেখেন তাদের সহকর্মীকে। মানসিক অবসাদ থেকে এমনটা ঘটিয়েছে বলে তাদের অনুমান। তবে কী কারণে তা তাদেরও জানা নেই।
অন্যদিকে বালুরঘাট থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তারা। পরে মৃতদেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছেন তারা।