পুরুলিয়া, 19 এপ্রিল : বছরের অন্য সময় যে খুব ভালো কিছু খাবার জোটে এমনটা নয় ৷ কিন্তু অভুক্ত থাকতে হয় না ৷ কিন্তু গ্রাস করেছে কোরোনা আতঙ্ক ৷ চলছে লকডাউন ৷ কেমন আছে পুরুলিয়ার শবর সম্প্রদায় ? রেশন কার্ড নেই । তাই লকডাউনে রেশন পাচ্ছেন না শবর সম্প্রদায়ের 18টি পরিবারের 70 জন মানুষ । এমনকী, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলেনি ফুড কুপন । তাই লকডাউনে রাজ্য সরকারের নিঃশুল্ক রেশন থেকে বঞ্চিত শবর সম্প্রদায়ের মানুষেরা l
নেই কার্ড, লকডাউনে রেশন জুটছে না পুরুলিয়ার 18টি শবর পরিবারের - Lockdown due to Cororna
খুদিটাড় গ্রামে প্রায় 113 টি শবর পরিবারের বসবাস l কিন্তু এখনও পর্যন্ত 18 টি পরিবারের 70 জন সদস্যের নেই রেশন l এই গ্রামের পরিবারগুলি প্রায় সকলেই দিন আনে দিন খায় l কেউ দিনমজুরের কাজ করেন, কেউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, কেউ আবার ঝাড়ু বুনে সামান্য রোজগার করেন l বর্তমানে লকডাউনে সমস্ত কাজ বন্ধ l তাই হাতে টাকাও নেই l নেই রেশন কার্ড l তাই মেলেনি রেশন সামগ্রীও l
কোনও NGO বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং এলাকার সহৃদয় ব্যক্তিরা গ্রামে এসে সামান্য খাদ্যসামগ্রী দিয়ে যান l আর তা দিয়েই কোনও রকমে আধপেটা খেয়ে চলছে শবর সম্প্রদায়ের 18 টি পরিবারের জীবন । ঘটনা পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা ব্লকের খুদিটাড় গ্রামে । লকডাউনের সময়ে দুস্থ পরিবারের কাছে রেশন পৌঁছানো বাধ্যতামূলক । কিন্তু অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে শবরদের । অভিযোগ, নজর নেই জেলা প্রশাসনের । খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ।
খুদিটাড় গ্রামে প্রায় 113 টি শবর পরিবারের বসবাস l কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রায় 18টি পরিবারের 70 জন সদস্যের নেই রেশন কার্ড l এই গ্রামের প্রায় সব পরিবারই সকলেই দিন আনে দিন খায় l কেউ দিনমজুরের কাজ করেন, কেউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, কেউ আবার ঝাড়ু বুনে সামান্য রোজগার করেন l বর্তমানে লকডাউনে সমস্ত কাজ বন্ধ l তাই হাতে টাকাও নেই l নেই রেশন কার্ড l তাই মেলেনি রেশন সামগ্রীও l এখন একমাত্র ভরসা NGO, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা এলাকার সহৃদয় ব্যক্তি l গ্রামে এসে সামান্য খাদ্য সামগ্রী দিয়ে যান তাঁরা l তা দিয়েই বর্তমানে দিন চলছে শবরদের l
খুদিটাড় শবর গ্রামে নজর নেই জেলা প্রশাসনের । বার বার স্থানীয় রেশন দোকানে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী চেয়ে ফিরে আসছেন তাঁরা l কিন্তু রেশন কার্ড না থাকলে রেশন মিলবে কোথা থেকে? হতাশ হয়েই ফিরে আসতে হচ্ছে । এছাড়াও গ্রামের বেশিরভাগেরই অক্ষরজ্ঞান নেই l নাম সইটুকুও ঠিকমতো করতে পারেন না, তাই রেশন কার্ডের জন্য আবেদন জানানোরও উপায় নেই । জানা যায়, এর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই গ্রামে রেশন কার্ডের জন্য সার্ভেও করা হয়েছে বার বার l তবুও 18টি পরিবার আজও রেশন কার্ড হাতে পায়নি l গ্রামবাসী জুড়ান শবর, সুরোধানি শবর, সুভাষ শবর, নিয়তি শবররা জানান, "লক ডাউনে কাজ বন্ধ । রোজগারের কোনও উপায় নেই l রেশন কার্ডও এখনও পায়নি l তাই প্রায় না খেয়েই কাটছে কোনওরকমে l কেউ কেউ গ্রামে এসে সামান্য খাদ্যসামগ্রী দিয়ে যান l তা দিয়ে তো আর 5-6 জনের পরিবারের সংসার চলে না । গতকাল পুলিশ এসে গ্রামের কিছুজনকে চাল ও আলু দিয়ে গিয়েছে l বেশিরভাগ মানুষই তা পায়নি l আমরা চাই প্রশাসন একটু নজর দিক এবং আমাদের রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করুক l"
এ বিষয় পুরুলিয়া জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, "বিষয়টি জানা ছিল না । ওই গ্রামের মানুষের চরম অবস্থার খবর পেতেই স্থানীয় পুঞ্চা BDO-কে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে l এ বিষয়ে বিস্তারিত পুঞ্চা ব্লকের BDO-ই বলতে পারবেন l" যদিও পুঞ্চা ব্লকের BDO অনিন্দ্য ভট্টাচার্য জানান, "খবর পেয়েছি অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । আজই গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে l"