পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

মেচেদায় ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহ শনাক্ত পরিবারের, খুনের অভিযোগ

কলকাতার বউবাজারের বাসিন্দা ছিলেন মৃত হাসান আলি ৷ দিঘায় হোটেল লিজ নিয়ে ব্রোকারদের সঙ্গে তাঁর চুক্তি হয় ৷ সেই অনুযায়ী তিনি টাকা নিয়ে দিঘা যাচ্ছিলেন ৷

deadbody recovered from local train in mecheda
হাসান আলি

By

Published : Feb 27, 2020, 2:52 AM IST

Updated : Feb 27, 2020, 7:10 AM IST

পাঁশকুড়া, 27 ফেব্রুয়ারি : অবশেষে মেচেদা স্টেশনের লোকাল ট্রেনে ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতের পরিচয় জানা গেল । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম হাসান আলি (45) । তিনি কলকাতার বউবাজার থানার বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা । তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দিঘায় হোটেল লিজ নেওয়ার জন্য কয়েকজন ব্রোকারকে টাকা দিতে যাওয়ার পথেই নিখোঁজ হয়ে যান হাসান । ব্রোকাররাই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই খুন করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পাঁশকুড়া GRP ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় কাঠের আসবাবের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হাসান আলি৷ গত রবিবার নিজের শ্যালিকার নিকাহ উপলক্ষে বিবি ও ছেলেকে নিয়ে পাঁশকুড়া গিয়েছিলেন তিনি । ওইদিন বিকেল নাগাদ পাঁশকুড়া থেকে তিনি কলকাতার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন । পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকাল ন'টা নাগাদ দিঘায় হোটেল লিজ নেওয়ার জন্য 6 লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন । নিকাহ উপলক্ষে হাসানের বিবি ও ছেলে পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর গ্রামেই থেকে গিয়েছিল । সোমবার দুপুর 1টার পর থেকে হাসানের সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি তাঁর পরিবারের লোকজন ৷ রাত 9টা নাগাদ পরিবারের তরফে বউবাজার থানায় প্রাথমিক অভিযোগ জানানো হয় ৷ পরে পাঁশকুড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে মেচেদায় লোকাল ট্রেনের কামরা থেকে একটি ট্রলিব্যাগ থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয় ৷ পরে হাসানের পরিবারের লোকজন পাঁশকুড়া GRP-তে এসে দেহ শনাক্ত করেন ।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগেই নিউ দিঘায় একটি হোটেল 21 লাখ টাকার বিনিময়ে এক বছরের জন্য লিজে নেওয়ার চুক্তি করেন হাসান সাহেব । ইতিমধ্যেই চুক্তি অনুযায়ী দুই দফায় ১৫ লাখ টাকা মিটিয়ে দিয়েছেন হোটেল মালিককে। বাকি ৬ লাখ টাকা দেওয়া হলেই চুক্তিপত্র অনুযায়ী 7 মার্চ থেকে হোটেল হস্তান্তরিত হত। সেই কারণে সোমবার ৬ লাখ টাকা নিয়ে কলকাতা থেকে তিনি রওনা দিয়েছিলেন দিঘার উদ্দেশে। এরপর দুপুর নাগাদ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি৷ পরিবারের লোকজন কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি। পরিবারের অভিযোগ, টাকা হাতানোর জন্যই ব্রোকাররা তাঁকে নৃশংসভাবে মুখ থেঁতলে দিয়ে খুন করেছে। যদিও দেহ কীভাবে লোকাল ট্রেনে এল তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। কারা ট্রলিব্যাগে করে মৃতদেহ ট্রেনে তুলে দিয়ে গেল তা জানতে ইতিমধ্যেই ট্রেনে থাকা CCTV ফুটেজ রেলের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে পাঁশকুড়া GRP। সেই ফুটেজ হাতে পাওয়া গেলেই ঘটনায় জড়িতদের সহজে চিহ্নিত করা যাবে বলে দাবি পুলিশের।

মৃতের বিবি সারিকা খাতুন জানান, দিঘায় হোটেল লিজে নেওয়ার জন্য তাঁর শওহরের সঙ্গে দিঘার বাসিন্দা ব্রোকার রাজু হালদার, গৌতম ও ননির ২১ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। ২৪ তারিখ বাকি ৬ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেই টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় ব্রোকারাই তাঁকে খুন করে থাকতে পারে বলে সারিকার অভিযোগ। তিনি চান, পুলিশ সঠিক তদন্ত করে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিক।

এবিষয়ে পাঁশকুড়া GRP-র OC অসীম পাত্র জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পরিবারের তরফে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

Last Updated : Feb 27, 2020, 7:10 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details