কোলাঘাট, 21 নভেম্বর: স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুললেন মৃতের বাবা ৷ গতকাল রাতে ছেলে খুন হলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় বাবা সুকুমার পড়িয়া সিবিআই তদন্ত চাইলেন ৷
এই ঘটনায় মৃতের বাবা সুকুমার পড়িয়া বলেন, "গতকাল প্রতিবেশী দোকানদারের কাছ থেকে জানতে পারি আমার ছেলে 5 থেকে 6টি বিয়েবাড়ির সোনার গয়না ৷ যার আনুমানিক বাজারমূল্য দাঁড়াচ্ছে প্রায় 40 লক্ষ টাকা ৷ এছাড়াও ছিল প্রায় 200 গ্রাম সোনা-সহ আড়াই কিলো রূপো ৷ যার বাজারমূল্য ছিল 12 লক্ষ 77 হাজার টাকা ৷ এইসব নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ছেলের পথ যখন দুষ্কৃতীরা আটকায় তখন সম্ভবত সে দুষ্কৃতীদের চিনে ফেলেছিল । তাই তাকে মাথায় গুলি করে খুন করে । তবে এই ঘটনায় ছেলের পরিচিত কেউ থাকলেও থাকতে পারে ।"
সুকুমারবাবুর কথায় জানা গিয়েছে, "এর আগেও 2 বার ডাকাতির মুখে পড়েছিল সমীর । প্রথমবার প্রায় 5 বছর আগে তার দোকানে ডাকাতি হয় । দ্বিতীয়বার দোকান থেকে ব্যাগ তুলে নিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা । সঙ্গে সঙ্গে ছেলে দুষ্কৃতীদের পিছনে ধাওয়াও করেছিল । কিন্তু দুষ্কৃতীরা তাঁকে বন্দুক দেখালে ভয় পেয়ে ছেলে পালিয়ে আসে । সেই ঘটনায় পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগও জানিয়েছিল । কারণ পুলিশ বাড়িতে এসেছিল । এবার তৃতীয়বার হামলায় ছেলেটার প্রাণটাই চলে গেল । দুষ্কৃতীরা পুলিশকে আর ভয় পাচ্ছে না । তারই ফল এই ঘটনা । যেভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীরা ছেলের উপর বন্দুক নিয়ে হামলা চালাল তা ভাবতেই গা শিউরে উঠছে । পুলিশ যদি সক্রিয় হত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না । গতকাল রাতে ঘটনা ঘটেছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি । তাই আমি পুলিশের নিস্ক্রিয়তা দেখে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাই ।"
তবে ছিনতাই ও খুনের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে যে, নগদ এত টাকা ও গয়না নিয়ে ওই ব্যবসায়ী কেন কোনও সুরক্ষা ছাড়াই এভাবে বাড়ি ফিরছিলেন ? মৃতের পরিবার সূত্রে আরও জানানো হয়েছে যে, এর আগেও 2 বার সমীরের উপর হামলা হয়েছিল । যা নিয়ে পুলিশের কাছে সমীরবাবু অভিযোগও জানিয়েছিলেন ৷
যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, ঘটনার পরেই পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে । একদিকে জেলার হেড কোয়ার্টার থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে । সেই সঙ্গে কোলাঘাট থানা থেকেও তদন্ত শুরু হয়েছে । এলাকার সিসিটিভি-সহ সমস্ত বিষয় গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এই ঘটনাটি নিছক ডাকাতি নাকি, এর পিছনে কোনও ব্যবসায়িক শত্রুতা রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় । গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে । তবে পুলিশ একজন সন্দেহজনকভাবে আটক করেছে । তবে পুলিশ রাস্তার ধারে সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে ।