কাটোয়া, 18 ডিসেম্বর: একটা বিয়ে বাড়িতে দু'জনের আলাপ হয়েছিল । তারপর মন দেওয়া-নেওয়া । দুই বাড়িতে জানাজানি হওয়ার পরে ছেলে নয়ন ঘোষ ও মেয়ে বিউটি ভট্টাচার্যর পরিবার তাদের বিয়ের পাকা কথা সেরে ফেলে । ঠিক হয় বিয়ের দিন ৷ নদিয়া থেকে নয়ন আসে বিয়ে করতে । ধুতি পাঞ্জাবি টোপর পরে রবিবার শীতের রাতে পৌঁছে যায় কাটোয়ার ভাগীরথীর ফেরিঘাটে । কনে পক্ষের তরফে তাদের সেখানে অপেক্ষা করতে বলা হয় । সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের কথা ছিল । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কনে পক্ষের কেউ নিতে আসেনি নয়নকে । শুধু তাই নয়, কনে পক্ষ মোবাইলের সুইচও অফ করে দেয় । অগত্যা কাটোয়া থানার পুলিশের দ্বারস্থ হয় নয়নের পরিবার ।
নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার বালিয়াডাঙা ফরিদপুরের বাসিন্দা নয়ন ঘোষ । তিনি জয়পুরে সোনার কাজ করেন । মাস ছয়েক আগে এক বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে বর্ধমানের বিউটি ভট্টাচার্যর পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । দুই পরিবার তাদের বিয়ে ঠিক করে । পাকা কথাও হয়ে যায় । কিন্তু বিয়ে করতে এসে ফাঁপরে পড়ে বর ৷ তাদের কাটোয়ার গোয়ালপাড়ায় আসতে বলা হয় । মেয়ের বাড়ির কথা মতো তারা কাটোয়ার ফেরিঘাটে অপেক্ষা করতে থাকে ৷ মেয়ের বাড়ি থেকে ফোন করে অপেক্ষা করতে বলা হয় । মেয়ের পরিবার জানায় তারা লোক পাঠিয়েছে কিন্তু দীর্ঘক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের নিতে আসেনি । শুধু তাই নয় মেয়ের পরিবার মোবাইলের সুইচড অফ করে দেয় । এরপর তারা কাটোয়া থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।
এই ঘটনায় ছেলের ঠাকুমা আরতি ঘোষ বলেন, "ফোনে ফোনে যোগাযোগ । মেয়ের পরিবার রাজি হয় বিয়ে দেওয়ার জন্য। দুই পক্ষের মধ্যে কথা বলে বিয়ের তারিখ ঠিক হল । আজ বিয়ের কথা ছিল । আমরা গোয়ালপাড়া ঘাটে এলাম । লোক দাঁড়িয়ে আছে । কিন্তু কেউ ছিল না । ফোন করলাম, বলল ঘোষপাড়া ঘাটে এসো । ওখানে গিয়ে দেখলাম কেউ নেই । প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করলাম কেউ আসেনি । আশেপাশের লোকেদের জিজ্ঞাসা করলাম কেউ ঠিকানা বলতে পারেনি । ফোনের সুইচড অফ করে দিয়েছে । আমরা থানায় অভিযোগ করেছি ।"
এদিন হবু বর নয়ন ঘোষ বলেন, "মেয়ের মাসির বাড়িতে বিয়ের কথা ছিল । তারা প্রতারণা করেছে । মাসির বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পাইনি । ঠিকানা দিয়েছে গোয়ালপাড়া বাঁধের ধারে বাড়ি । আমরা এসে ঠিকানা খুঁজে পাইনি । ফোনে বলে নৌকা পাঠিয়েছি । কিছুক্ষণ পরে বলে অপেক্ষা করার জন্য । কিন্তু তারপর আর কেউ আসেনি । আমি জয়পুরে জুয়েলারির কাজ করি । একটা বিয়েবাড়িতে মেয়ের সঙ্গে আলাপ হয় । পরে দেখা সাক্ষাৎ হয় । 28 ডিসেম্বর বিয়ের তারিখ ছিল । কিন্তু ওদের পরিবারে দাদু মারা গিয়েছিল । তাই এদিন রেজিস্ট্রি করে বিয়ের কথা ছিল । কিন্তু এসে কাউকেই পাইনি । কেন এমন করল সেটা জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি ।"