বর্ধমান, 7 মার্চ: বাংলার সর্বত্র পূর্ণিমার দিন দোল রেখা রীতি ৷ এই রীতির ব্যতিক্রম শহর বর্ধমান ৷ এখানে দোল খেলা হয় পূর্ণিমার একদিন পরে ৷ প্রায় তিনশো বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে ৷ এর পিছনে আছে রাজার আধ্যাত্মকি ভাবনা ৷ বর্ধমানের মহারাজা তখন মহতাবচাঁদ ৷ বর্ধমান রাজবাড়ির কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ৷ রাজার ব্যক্তিগত মতামত, এই পূর্ণিমায় দেবতারা দোল খেলেন ৷ তাই এদিনটি মানুষের দোল খেলার জন্য নয় ৷ তারা পরের দিন দোল খেলবে ৷ এদিন মহতাবচাঁদ দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করতেন ৷ ফলে ওই দিন রাজবাড়িতে কেউ আবির খেলতেন না ৷ তার পরেরদিন আবির খেলায় মেতে উঠত রাজপরিবার । পরবর্তীকালে রাজবাড়ির ঐতিহ্য মেনে বর্ধমানবাসীও দোলের পরদিন রঙ খেলা শুরু করে (Holi Celebration in Bardhaman) ৷
এখন একবিংশ শতক ৷ 2023 সালে রাজা নেই । নেই রাজবাড়ির জাঁকজমক ৷ এখনও রাজার প্রচলিত রীতি মেনে লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দিরে দেবতার উদ্দেশ্যে আবির নিবেদন করা হয় ৷ রাজাকে সম্মান জানিয়ে বর্ধমান শহরবাসীও এদিন রং না খেলে পরদিন উৎসব পালন করে ৷ রাজবাড়ির প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র বলেন, "রাজা মহতাব চাঁদ দোল উৎসবের দিনে কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ জিউকে উৎসর্গ করে আবির দিতেন ৷ যেহেতু ওই দিন দেবতাকে আবির দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে, তাই তিনি ওই দিন আবির খেলতেন না ৷ আবির খেলা হত পূর্ণিমার পরের দিন ৷ রাজবাড়ির প্রতি সম্মান জানিয়ে বর্ধমানবাসীও একদিন পরে দোল উৎসব করে ৷" এমনিতে সারাবছর লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ এবং দেবী মা চণ্ডিকার মন্দিরে নিত্যসেবা হয় ৷ প্রতিদিন দেবতাকে ভোগ নিবেদন করা হয় ৷