পশ্চিম মেদিনীপুর, 6 মে: বেশ কিছুদিন আগে অবধিও জঙ্গলমহল অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুর গ্রিন জো়নেই ছিল ৷ কিন্তু পরপর তিন কোরোনা পজেটি়ভ রোগী মেলায় তা অরেঞ্জ জো়নের তালিকাভুক্ত হয় । লকডাউন চলাকালীনই খড়গপুরে রেলের বেশ কয়েকজন RPF কোরোনাতে আক্রান্ত হন ৷
এই ঘটনার পর থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরকে রেড জো়ন হিসাবে ঘোষণা করে কেন্দ্র স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যদিও সংশ্লিষ্ট এলাকার পাশাপাশি এলাকাগুলিকে সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আর কনটেইনমেন্ট জো়নে জরুরি পরিষেবা বাদে কোনওভাবেই এলাকা থেকে ঢোকা বা বেরোনো যাবে না এরকমই নির্দেশ প্রশাসনের।
চ কনটেইনমেন্ট জো়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলিতে চলছে নাকা চেকিং ৷ এই 5 কনটেইনমেন্ট জো়নে রয়েছে ঘাটালের দুটি এলাকা ,খড়গপুরের দুটি এলাকা এবং মেদিনীপুরের 25 নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশন পাড়া এলাকা। যেসব এলাকা থেকে কোরোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা পাওয়া গেছে সেসব এলাকাগুলিকে কনটেইনমেন্ট জো়নে ভাগ করে বাকি এলাকাগুলো সচল রাখতে প্রস্তুত হল জেলা প্রশাসন।
এই কনটেইনমেন্ট জো়নকে রাত থেকেই গার্ড রেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ৷ এছাড়াও চলে নাকা চেকিং। নির্দেশ দেওয়া হয় এখানকার মানুষ কোনওভাবেই মেদিনীপুরের বাকি অংশে বেরোতে পারবে না এবং ঢুকতে পারবে না। একমাত্র জরুরি পরিষেবা এবং রোগীদের ট্রিটমেন্ট ছাড়া এই জো়ন থেকে বেরোনো এবং প্রবেশ নিষিদ্ধ ৷
এই জো়নে আগামী দশ দিন ধরে বিশেষভাবে নজর রাখবে প্রশাসন। তারপর নতুন করে কেউ আক্রান্ত না হলে এই এলাকাগুলিকে কনটেইনমেন্ট জো়নের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে ।
পশ্চিমমেদিনীপুরের বর্তমান পরিস্থিতির বিজ্ঞপ্তি ৷ উল্লেখ্য, ঘাটালে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি গতকাল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৷ ফলে কনটেইনমেন্ট ঘোষণা হওয়া সত্বেও স্বস্তি মিলেছে এলাকায়। তবে নতুন করে ক্ষীরপাই এলাকায় একজন নতুন করে কোরোনা পজিটি়ভ ধরা পড়ায় কোরোনার সংখ্যা দাঁড়ল বর্তমানে 3 জন। এছাড়াও বেশ কয়েকজনকে হোম কোয়ারানটিনে পাঠায় স্বাস্থ্য দপ্তর। তাদের সোয়াব টেস্ট করা হবে বলে জানায় জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। অপরদিকে মেদিনীপুর পৌরসভার 25 নম্বর ওয়ার্ড ভুক্ত স্টেশনপাড়া সংলগ্ন এলাকা কনটেইনমেন্ট জো়ন ঘোষণা হওয়ায় নতুন করে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
এখানে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য হওয়া সত্ত্বেও কেন কনটেইনমেন্ট ঘোষণা করা হল সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও গভীর রাত সংশ্লিষ্ট এলাকাটিকে গার্ড-রেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ।
বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন , "আমাদের ঘাটালে কোরোনা পজিটি়ভ অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার গতকাল রাত্রে ফিরেছে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন । তবে নতুন করে ক্ষীরপাই এলাকায় এক বৃদ্ধ আক্রান্ত হওয়ার উদ্বেগ বেড়েচ্ছে আমাদের। কেননা ওই বৃদ্ধ অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিল মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ৷ তারপর তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে সেই বেসরকারি নার্সিংহোমে বেশ কয়েকজন সহ এলাকার 9 জন মিলিয়ে প্রায় 20 জনকে হোম পাঠানো হয়েছে। এর সঙ্গে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা এক কলকাতার রোগীর কোরোনা পজিটি়ভ ধরা পড়েছে । এই ঘটনার জেরে মেদিনীপুর মেডিকেলের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড এবং বেসরকারি নার্সিংহোম এই মুহূর্তে বন্ধ রাখতে আমরা বাধ্য হয়েছি।"