দুর্গাপুর, 8 মার্চ: অনেকের মতো তিনিও ভয় পেতেন । কিন্তু, সর্পপ্রেমী স্বামীকে দেখেই একদিন সেই ভয় কাটিয়ে ওঠেন । শুধু ভয় কাটিয়েই ওঠেননি, একের পর এক বিষধর সাপ ধরে আতঙ্ক থেকে অন্যদের মুক্তি দিচ্ছেন দুর্গাপুরের "জ্যোৎস্না" অর্পিতা । সঙ্গে সাপ না মারার পরামর্শও দেন ।
দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর বি-জোন নিউটন রোডে বাপের বাড়ি অর্পিতা মজুমদারের । দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর এ-জ়োন রানাপ্রতাপ রোডের বাসিন্দা দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর৷ প্রথমে দেবাশিসবাবু রাত পাহারার কাজ করতেন । সেই কাজ করতে করতেই বনদপ্তরের অনুমতি নিয়ে দুর্গাপুরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাপ ধরতে যেতেন ৷ এরপর সেই সাপকে ছেড়ে আসতেন জঙ্গলে ৷ তা ধরার জন্য খুবই কম অর্থ নিতেন তিনি ।
প্রথমে স্বামীর এই কাজকে সমর্থন করতেন না অর্পিতা । কিন্তু, ধীরে ধীরে একদিন তিনি নিজেও এই কাজকে ভালোবেসে ফেলেন । এরপর থেকে "স্নেক লাভার" স্বামীর কাছে যখনই সাপ ধরতে যাওয়ার জন্য ফোন আসত তখন তিনি সঙ্গে যেতেন ৷ দেবাশিসবাবুকে একাধিক বার বিষাক্ত সাপের দংশন সহ্য করতে হয়েছে, ভরতি থাকতে হয়েছে হাসপাতালে ৷ এসব দেখেও ভয় পাননি অর্পিতা । বরং লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন তিনিও ৷
এখন আর শুধু দুর্গাপুরেই নয়, পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাধিক জায়গায় সাপ ধরতে যান অর্পিতা । গোখরো, চন্দ্রবোড়া হোক বা নির্বিষ কোনও সাপ, অবলীলায় স্টিক নিয়ে বশ মানিয়ে ব্যাগে পুরে নিতে একটুও ভয় পান না দুর্গাপুরের এই "বেদের মেয়ে" ৷ উলটে সব ভয় কাটিয়ে তিনি এখন সবাইকে সাপ বাঁচানোর কথা বলেন। আর সাপগুলিকে জঙ্গলে ছাড়ার মুহূর্তে তাঁর চোখেমুখে আনন্দ ধরা পড়ে । তাঁর কথায়, "আমার মনে হয় যেন মায়ের কোলে সন্তানকে ফিরিয়ে দিলাম ।"