আসানসোল, 9 সেপ্টেম্বর: রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার কঙ্কালসার অবস্থার চিহ্ন মিলবে আসানসোল পৌরনিগমের(Asansol Municipal Corporation)28 নম্বর ওয়ার্ডের আর্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে(Asansol News)। বছরের পর বছর এই স্কুলটি ভাড়া বাড়িতে চলছে । যার কারণে টাকার অভাবে দীর্ঘদিন স্কুলের মেরামতি হয় না । টালির ছাদ ভেঙে বৃষ্টির জল ঢোকে । ভাঙা জানালা দরজা । খসে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তারা । পানীয় জল নেই, শৌচাগার নেই । চরম অব্যবস্থার মধ্যে চলছে আসানসোলের এই আর্য প্রাথমিক বিদ্যালয়(Primary School is running in rented house without drinking water and bathroom)।
আসানসোলের রেলপাড়ের কেটি রোডে 1974 সালে তৈরি হয়েছিল এই অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় । বর্তমানে চার জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন এই স্কুলে । মোট 85 জন পড়ুয়া রয়েছে । যাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত পরিবারের । বড় স্কুলে পড়ার ক্ষমতা না থাকায় এলাকার দিনমজুর শ্রেণির পরিবারের ছেলেমেয়েরা বাধ্য হয়েই এই ভেঙে পড়া স্কুলে আসে ৷
আসানসোলের আর্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ স্কুলের আজও নিজস্ব কোনও ভবন নেই । কয়েক দশক ধরে ভাড়া বাড়িতেই চলছে স্কুল ৷ বাড়ির মালিক মেরামতিতে রাজি নয় । তাই স্কুলের দশা দিনের পর দিন জীর্ণ থেকে জীর্ণতর হয়েছে । আর সেই ভাঙা ঘরেই স্কুল চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন প্রধান শিক্ষিকা মার্গারেট টিগ্গা ।
আরও পড়ুন :রোদ-বৃষ্টির মধ্যে চলছে পড়াশোনা; আবেদন করেও সংস্কার হয়নি বোলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
স্কুলে নেই শৌচাগার । ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের বাইরের গলিতে গিয়ে শৌচকর্ম সারলেও স্কুলের তিন শিক্ষিকাকে সকাল 10টা থেকে বিকেল 4টে পর্যন্ত শৌচকর্ম চেপে রাখতে বাধ্য হন । স্কুলে নেই পানীয় জল । এমনকি মিড-ডে মিল খেতে স্কুলের বাইরে ব্যস্ততম রাস্তা পার করে যেতে হয় অন্য ভবনে । ফলে দুর্ঘটনার প্রবল আশঙ্কা থাকে ।
এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মার্গারেট টিগ্গা বলেন, "প্রশাসনিক স্তরে সব জায়গায় স্কুলের দুর্দশার কথা জানানো হয়েছে । কাউন্সিলর নিজেও বহু চেষ্টা করেছেন । তবু এখনও পর্যন্ত স্কুলের দুর্দশা মেটেনি । প্রচণ্ড সমস্যায় স্কুল চালাতে হয় । ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধা তো আছেই, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও প্রচণ্ড কষ্ট করে এখনও পর্যন্ত স্কুলকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ।"
ভাড়াবাড়িতে ভগ্নপ্রায় সরকারি প্রাথমিক স্কুল আরও পড়ুন :চিপস খাওয়া নিয়ে গণ্ডগোল, ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ বন্ধুর বাবার বিরুদ্ধে
ছাত্র-ছাত্রীদের কথায়, "বৃষ্টির দিনে প্রচণ্ড ভয় লাগে । বাজ পড়লে মনে হয় যেন গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে ৷ সেই ভয় নিয়ে ক্লাস করি । বাথরুম নেই তাই বাধ্য হয়ে শৌচকর্ম সারতে ক্লাসরুমের বাইরের গলিতে যেতে হয় ।"
যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর গুলাম সরোবর এই বিষয়ে জানান, স্কুলের পাশেই একটি সরকারি জমি রয়েছে । সেই জমিতে স্কুল ভবন করার ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়েছি আমরা । কিন্তু সেই জমিটিও স্থানীয় এক ব্যক্তি দখল করতে চাইছে । আমরা প্রশাসনিক স্তরে পুরো ব্যাপারটা জানিয়েছি, প্রশাসন একটু উদ্যোগী হলেই স্কুল ভবন তৈরি হতে পারে ।"
আরও পড়ুন :রুদড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল দরজায় অজস্র বানান ভুল, বিতর্ক