পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Vishwakarma Puja 2023: নতুন শিল্প স্থাপনের স্বপ্ন, রূপনারায়ণপুরে বন্ধ কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো শ্রমিকদের

Vishwakarma Puja in Defunct Factory: নতুন শিল্প স্থাপনের স্বপ্ন নিয়ে রূপনারায়ণপুরে বন্ধ কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজোর আরাধনায় মেতেছেন শ্রমিক ও নিরাপত্তা রক্ষীরা ৷

Vishwakarma Puja in Defunct Factory
রূপনারায়ণপুরে বন্ধ কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো শ্রমিকদের

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 18, 2023, 6:49 PM IST

রূপনারায়ণপুরে বন্ধ কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো শ্রমিকদের

রূপনারায়ণপুর, 18 সেপ্টেম্বর: চারিপাশে যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা । একসময় যেখানে ভারী যন্ত্রাংশের আওয়াজ চলত, সেখানে যেন কোনও এক বিশ্বকর্মার অভিশাপে সমস্ত কিছু স্তব্ধ । তবু নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে । বন্ধ হিন্দুস্তান কেবল কারখানায় বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা বিশ্বকর্মা পুজো করে প্রার্থনা করলেন যেন নতুন কোনও শিল্প আসে এই বন্ধ কারখানার জমিতে । নতুন দিন আসে ।

1952 সালে রাষ্ট্রায়ত্ত এই কারখানার পথ চলা শুরু হয়েছিল । এশিয়া বিখ্যাত 'জেলি ফিলড কেবল' তৈরি হত এখানে । এক সময় জমজমাট ছিল কারখানা । 1100 শ্রমিক আবাসন, হাসপাতাল, স্কুল, ব্যাংক নিয়ে সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে গড়ে ওঠে এক আধুনিক নগরজীবন । কিন্তু যেন কোনও এক বিশ্বকর্মার অভিশাপে চঞ্চল, কর্মব্যস্ত কারখানার মাথার উপরে কালো মেঘ নেমে আসে ।

নয়ের দশক থেকেই পরিকল্পনার অভাবে কারখানা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করে । শুরু হয় উৎপাদন হ্রাস ও কর্মী ছাঁটাই । এই ভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে 2001 সালে সম্পূর্ণ ভাবে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় । এরপর কারখানার ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব যায় বিআরপিএসি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পুনরুজ্জীবন বোর্ডের কাছে । মাঝে একবার নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল । 2013 সালে কেন্দ্রীয় অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড উৎসাহ প্রকাশ করেছিল কারখানা অধিগ্রহণের জন্য ।

2016 সালে বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর শেষ চেষ্টা করেছিলেন কারখানার পুনর্জন্ম দিতে । কিন্তু সব চেষ্টা বৃথা যায় । দেড় দশক ধরে উৎপাদনহীন হয়ে পড়ে থাকার পর 2017 সালের 31 মার্চ পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা । তারপর থেকেই কারখানার যন্ত্রাংশ একের পর এক নিলামে বিক্রি হয়ে যায় । আবাসনের জানলা-দরজা চুরি হয়ে কঙ্কালসার চেহারা নেয় । কারখানাও কার্যত শ্মশান ভূমিতে পরিণত হয় । এখন কারখানার গেট আর পোড়ো বাড়ির মতো কারখানার কয়েকটি ভবন দাঁড়িয়ে আছে । তবু 31 জন ঠিকা নিরাপত্তারক্ষী আগলে রেখেছেন কারখানাকে ।

আরও পড়ুন:বিশ্বকর্মার হাতে চন্দ্রযান-3! ইসরোর সাফল্য উদযাপনে তাক লাগালেন দাসপুরের মৃৎশিল্পী

কথায় আছে আশায় বাঁচে চাষা । কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় একটি দল কারখানার জমি পরিদর্শন করে গিয়েছে । সম্প্রতি রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দফতরের সচিব স্মারকী মহাপাত্র কারখানার জমি পরিদর্শন করেছেন । তাঁরা সরকারি ভাবে কিছু জানাতে না চাইলেও ক্ষীণ সম্ভাবনা ও আশার সঞ্চার হয়েছে যে, যদি কারখানার এই সুবিশাল 900 একরের বেশি জমিতে নতুন কোনও শিল্প আসে ।

এলাকার তৃণমূল নেতা ভোলা সিং জানালেন, "কেন্দ্রীয় সরকার এখানে নতুন কোনও শিল্প করবে সে আশা আমরা করি না । কিন্তু এই জমি এক সময় এক টাকার লিজে রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে দিয়েছিল । বর্তমানে এই জমি রাজ্য সরকার চাইতে গেলে কেন্দ্র 500 কোটি টাকা চাইছে । রাজ্য সরকার জমি পেলে নিশ্চয়ই সেখানে কোনও নতুন শিল্প গড়ে উঠবে বলে আমাদের আশা ।"

যদিও কেন্দ্রীয় টিম এবং রাজ্য সরকারের সচিব আসার পরেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন কারখানার প্রাক্তনী এবং নিরাপত্তারক্ষীরা । তাই তাঁরা আবার বিশ্বকর্মার আরাধনায় মেতেছেন । কারখানার প্রাক্তন শ্রমিক থেকে শুরু করে পুরোহিত সবাই চাইছেন কারখানার জমিতে আবার নতুন করে কোনও শিল্প গড়ে উঠুক । বন্ধ কারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো ক'রে এমনই প্রার্থনায় মেতেছেন সবাই ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details