আসানসোল, 8 নভেম্বর: আসানসোল শিল্পাঞ্চলে কোনও ক্যানসার হাসপাতাল ছিল না। সম্পূর্ণ চিকিৎসা তো দূরের কথা ন্যূনতম কেমো নিতে গেলেও কলকাতা যাওয়া ছাডা় আর কোনও উপায় ছিল না। একদিকে এই চিকিৎসার খরচও অনেক । পাশাপাশি, এত বড় রোগের সঙ্গে লড়তে মানসিক শান্তিও জরুরি । ফলে রোগীরা আরও বেশি করে হতাশাগ্রস্থ হয়ে যেতেন । আর সেই হতাশার ফলে তাদের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হত ।
এমনই সংকটের আবহে 2021 সালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে শুরু হয় ক্যানসার ইউনিট। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অমিত মুখোপাধ্যায়েরের একার তত্ত্বাবধানে এই ইউনিট চলছে আজও। বর্তমানে প্রায় শতাধিক ক্যানসার আক্রান্ত মানুষ এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পাচ্ছেন বিনামূল্যে । প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে যেমন, তেমনি তৈরি হচ্ছে ভরসার জায়গা ।
ক্যানসার শব্দের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভয়। একদিকে মৃত্যু হয়, অন্যদিকে এই মারন রোগে পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে যায় । অথচ ক্যানসার রোগীরা যদি সঠিকভাবে সচেতন হতে পারেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন, বন্ধুর মত ভরসা পেতে পারেন, তাহলে এই রোগ অনেকাংশেই নিরাময় যোগ্য । আসানসোল জেলা হাসপাতাল সেই কাজ করছে । প্রায় শতাধিক ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং পাশে বন্ধুর মত চিকিৎসক অমিত মুখোপাধ্যায় যেভাবে ভরসা জায়গা তৈরি করেছেন তাতে রোগীরা চরমভাবে সন্তুষ্ট । ক্যানসার সচেতনতা দিবসে রোগীরা চিকিৎসকদের কাছে নিজেদের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন আনন্দে রোগীরা । অনেকেই জানালেন, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে আজ আমরা অনেকটাই সুস্থ । আমরা বাঁচতে চাই ।
শিল্পাঞ্চলে ক্যানসারের প্রকোপ কি বাড়ছে ?
আসানসোল জেলা হাসপাতালের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন "যেহেতু 2021 সাল থেকে আমাদের এই ইউনিট শুরু হয়েছে সুতরাং তার আগের ডেটা আমাদের কাছে নেই । তাই ক্যানসার বাড়ছে না কমছে এ কথা বলা ঠিক নয় । কিন্তু 2021 সালের পর থেকে আমরা যেটা দেখছি সেটা ওরাল ক্যানসার বা মুখের ক্যানসারের রোগী প্রচুর পরিমাণে আসছে । যেভাবে গুটখা, খৈনি, পানমশালা জাতীয় জিনিস মানুষ খাচ্ছেন তাতে এই ওরাল ক্যানসারের প্রবণতা প্রচণ্ড বেশি ছড়াচ্ছে । এছাড়াও ব্রেস্ট ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসারের রোগী আমরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে বেশি পরিমাণে পাচ্ছি ।"
কীভাবে নিরাময় যোগ্য এই রোগ ?