খড়গ্রাম, 2 সেপ্টেম্বর : খড়গ্রামের কানাইলাল ঘোষের মাটির বাড়ির মেঝেতে বসে মধ্যাহ্নভোজন সেরেছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। রাজনৈতিক পরিমণ্ডল টপকে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানাললাল ঘোষের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। রাজনৈতিক বা সরকারি কাজে যখনই খড়গ্রামে আসতেন মধ্যাহ্নভোজনের ব্যবস্থা থাকাত কানাইবাবুর দোতলা মাটির বাড়িতে। কখনও আসন পেতে মেঝেতে বসে, কখনও চেয়ার টেবিলে বসে পোস্তর নানা পদ দিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সারতেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। খাওয়ার পর ওই বাড়িতেই ঘণ্টা খানেক বিশ্রাম নিতেন। নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াতেন কানাইলালবাবুর স্ত্রী বাণী ঘোষ। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত বছর সত্তরের কানাইলালবাবু বর্তমানে কথা বলতে পারেন না। সেদিনের স্মৃতিচারণ করলেন বাণী ঘোষ ও কানাইলালবাবুর বন্ধু অনিল প্রামাণিক।
আলু পোস্ত, কাতলার কালিয়া ; খড়গ্রামে এলেই মধ্যাহ্নভোজন করতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়
খড়গ্রামের কানাইলাল ঘোষ তখন জয়পুর পঞ্চায়েতের প্রধান ৷ তাছাড়া শিক্ষকতা করতেন সাউন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৷ 2004 সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হন প্রণব মুখোপাধ্যায় ৷ সেই সময় থেকে কানাইলালবাবুর সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আলাপ ৷ যখনই কোনও কর্মসূচিতে প্রণব মুখোপাধ্যায় খড়গ্রামে আসতেন তখনই কানাইলালবাবুর বাড়িতেই দুপুরের খাবার খেতেন ৷ মধ্যাহ্নভোজের মেনুতে থাকত আলু পোস্ত, পটল পোস্ত, পোস্তের বড়া পুকুরের কাতলা মাছের কালিয়া।
মেঝেতে আসন পেতে বসেও খেয়েছেন রাজনীতির চাণক্য। কানাইলালবাবুর বন্ধু অনিল প্রামাণিক বললেন, প্রণববাবু খাওয়ার পর এখানেই এক ঘণ্টা বিশ্রাম নিতেন। অনেক ছবি রয়েছে সেই সময়ের। আজ সব স্মৃতি। ভারতবর্ষের জয়পুর পঞ্চায়েত একমাত্র সার্ক ভিলেজের তকমা পেয়েছিল প্রণববাবুর সৈজন্যে। সাউন্দি স্কুলে গিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গেও সময় কাটিয়েছেন কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যানেজার। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে পর্যন্ত বহুবার এসেছেন কানাইলালবাবুর মাটির বাড়িতে। আজ প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। ওই বাড়ির মানুষ চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছেন। বহুবার এসেছেন এই বাড়িতে। খাওয়ার পর বিশ্রামও নিতেন এখানেই।