মালদা, ৬ মার্চ : নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কের ধস মেরামত করতে লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গকে পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির। আর তাদের নিশানার প্রথম দিকেই রয়েছে উত্তরবঙ্গের আসনগুলি। রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের কাছে এটা এখন স্পষ্ট। তার কাজও শুরু করে দিয়েছে BJP। আজ থেকে তারা শুরু করেছে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শিবির। মালদা থেকেই উত্তরবঙ্গের শিবির করার কাজ শুরু হয়েছে। শিবিরে অংশ নেওয়া দলীয় কর্মীদের পই পই করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে তুলে ধরতে হবে পাকিস্তানের উপর প্রত্যাঘাতের প্রসঙ্গ।
লোকসভা ভোটে নিজেদের নকশা তৈরি করতে আজ মালদা শহরের একটি বেসরকারি লজে BJP-র নির্বাচনী প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়। শিবিরে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, উত্তরবঙ্গ সহকারী সংগঠন সম্পাদক কিশোর বর্মণ, উত্তরবঙ্গ জ়োনের আহ্বায়ক রথীন্দ্র বসু প্রমুখ। ছিলেন দলের মালদা জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র সহ অন্য নেতৃত্বও। এবারের নির্বাচনে BJP বুথ ভিত্তিক সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। সূত্রের খবর, আজকের শিবিরে অরবিন্দ মেনন দলীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই তৃণমূলের ভয়ে পিছিয়ে আসা চলবে না। সামনে থেকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। শাসকদলের বাধা সরিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। প্রত্যেক BJP কর্মীকে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে হবে।
BJP-র এই শিবিরে আজ সংবাদমাধ্যমের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। অরবিন্দ মেনন সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হননি। তবে রথীন্দ্রবাবু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের প্রতিটিতে আমরা নিজেদের সংগঠন আরও শক্তিশালী করার জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি নিয়েছি। এর আগের কর্মসূচিতে আমরা বাইক মিছিল করেছিলাম। সেই কর্মসূচিতে আমরা সারা রাজ্যে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছি। যে আন্দোলন আমরা শুরু করেছি তা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। সংগঠনকে আরও মজবুত করার জন্য আমরা এবার বুথের উপর স্তরে অর্থাৎ ৫ থেকে ৭টি বুথ নিয়ে আমরা শক্তিকেন্দ্র করেছি। সেই শক্তিকেন্দ্রগুলি যারা পরিচালনা করছেন, তাঁদের নিয়েই আজ আমরা এই শিবির করছি। আসন্ন লোকসভা ভোট কীভাবে পরিচালনা করা হবে, তা আজকের শিবিরে সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভোটে আমাদের স্লোগান কী হবে, কী ইশু নিয়ে আমরা মানুষের কাছে যাব, সেসব বিষয়ই আজ শিবিরে আলোচনা হচ্ছে। আজ থেকে উত্তরবঙ্গে এই কর্মসূচি শুরু হল। মালদা দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি শেষ হবে কোচবিহারে।"
ভোটপ্রচারের অস্ত্র হোক পাকিস্তানের উপর প্রত্যাঘাত, কর্মীদের বার্তা BJP-র
"পাকিস্তান যেভাবে সন্ত্রাসবাদীদের দিয়ে এদেশের জওয়ানদের হত্যা করেছে, তার বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদির সরকার প্রত্যাঘাত করেছে। এতে সারা বিশ্বে ভারতের নাম একটি অন্য জায়গায় উঠে এসেছে।"
রথীন্দ্রবাবু আরও বলেন, "পাকিস্তান যেভাবে সন্ত্রাসবাদীদের দিয়ে এদেশের জওয়ানদের হত্যা করেছে, তার বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদির সরকার প্রত্যাঘাত করেছে। এতে সারা বিশ্বে ভারতের নাম একটি অন্য জায়গায় উঠে এসেছে। সারা বিশ্ব আজ ভারতের পাশে। ভোটে তাঁরা এবিষয়টিকে ইশু করছেন। দলীয় কর্মীরা মানুষের কাছে গিয়ে এই বিষয় তুলে ধরবেন। এছাড়া নরেন্দ্র মোদি সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের জন্য যেসব কাজ করেছেন, তাও নির্বাচনী প্রচারে তুলে ধরা হবে।" রথীন্দ্রবাবুর আরও সংযোজন, "মানুষ এখন আর তৃণমূলের পাশে নেই। এই রাজ্যের মানুষ এখন পরিবর্তন চাইছে। BJP-ই পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র পরিবর্তন আনতে পারে। বাম ও তৃণমূল সরকার পশ্চিমবঙ্গকে কোন জায়গায় নিয়ে গেছে, তা মানুষ বুঝতে পারছে। তাই মানুষ এখন বিকল্প হিসাবে BJP-কেই চাইছে। প্রার্থী ঠিক করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে যিনিই প্রার্থী হোন না কেন, BJP কর্মীরা তাঁকে জেতাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।"