মালদা, 28 ডিসেম্বর : আন্দোলন চলাকালীন জেলায় এসে আন্দোলনকারীদের পিঠে হাত রেখে রাজ্যের ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল সার্ভিসেস আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের দ্রুত কাজে পুনর্বহাল করা হবে । কলকাতা ফিরে তিনি সেই আশ্বাস পূরণের ব্যবস্থাও নেন । কিন্তু বছর গড়িয়ে গেলেও নিজেদের কাজ ফিরে পাননি মালদা মেডিক্যালের 135 জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী । তাই পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার থেকে ফের একবার মেডিক্যালের কর্তাদের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করতে চলেছেন তাঁরা (Part time health Workers of Malda Medical are starting a protest for their Job security) ।
গত জুলাই মাসেই মালদা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ 156 জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় । কর্তৃপক্ষের মতে, অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল এই কর্মীদের । ফলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ নোটিশ জারি করে জানিয়ে দেয়, 31 জুলাইয়ের পর থেকে এই কর্মীদের আর প্রয়োজন নেই । তবে অস্থায়ী কর্মীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁদের স্থায়ীকরণের জন্য কয়েক দফায় রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনে ই-ফাইল পাঠায় কর্তৃপক্ষ । কিন্তু স্বাস্থ্য ভবন থেকে সঠিক কোনও নির্দেশিকা না আসায় অগাস্ট থেকে এই কর্মীদের কাজ চলে যায় ।
এরপরেই কাজে পুনর্বহাল করার দাবিতে মেডিক্যালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা । শেষ পর্যন্ত অগাস্টের প্রথম সপ্তাহে মেডিক্যাল পরিদর্শনে এসে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল সার্ভিসেস দেবাশিস চক্রবর্তী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কর্মীদের আশ্বাস দেন, তাঁদের দ্রুত কাজে পুনর্বহাল করা হবে । সেই আশ্বাসে কর্মীরা নিজেদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেন । এরপর গত ৮ নভেম্বর স্বাস্থ্য ভবন থেকে জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়, মালদা মেডিক্যালের 135 জন অস্থায়ী কর্মীকে কাজে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত ৷ কর্মীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য ভবনের সেই নির্দেশিকায় তাঁদের কীভাবে কাজে নিয়োগ করা হবে তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা নেই । ফলত দীর্ঘ জটিলতার জেরে এখনও তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি, মানসিক অবসাদে ইতিমধ্যেই দুই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে ।
পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু মালদা মেডিক্যালের 135 জন অস্থায়ী কর্মীর আরও পড়ুন : এপিসি কলেজে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের উপর হামলা, অভিযুক্ত টিএমসিপি
মালদা মেডিক্যাল অস্থায়ী কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক পিন্টু শেখ বলেন, “নভেম্বরে স্বাস্থ্য ভবনের নিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশিকা আসার পর আমরা মেডিক্যালের সহকারী অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি । জানতে পারি, সেই নির্দেশিকায় অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে । মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষও ওই নির্দেশিকা ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারছিল না। এরপর মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ঠিকাদারের অধীনে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। তার জন্য টেন্ডারও করা হয় । ১৩ ডিসেম্বর টেন্ডার ওপেন হয়েছে । কিন্তু আমাদের কবে পুনর্নিয়োগ করা হবে, তা এখনও মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ বলতে পারছে না । ” মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি সমস্ত নিয়ম মেনে ওই কর্মীদের দ্রুত পুনর্নিয়োগের জন্য আমরা চেষ্টা করছি । এব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও কিছু নির্দেশিকা পাঠিয়েছে । সব দিক দেখেই আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি ।”