মালদা, 13 মার্চ: তথ্যটা যথেষ্টই উদ্বেগের ৷ গত 11 ফেব্রুয়ারি বামনগোলা ব্লকের একটি স্কুলে থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবিরের আয়োজন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৷ ওই ব্লকের 116 জন পড়ুয়া ওই শিবিরে নিজেদের রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিল ৷ সেই রক্ত পরীক্ষার ফল বেরনোর পর কার্যত দুশ্চিন্তা বেড়েছে সবার (Increasing number of Thalassemia Patient) ৷
কী বলছে রিপোর্ট ?
ওই 116 জন পড়ুয়ার মধ্যে 17 জন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত । 33 জন ওই রোগের ক্যারিয়ার ৷ বিষয়টি জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও ৷ গত 11 ফেব্রুয়ারি বামনগোলার পাকুয়াহাট যদুনাথ বালিকা বিদ্যালয়ে ওই শিবিরের আয়োজন করেছিল ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের মালদা জেলা শাখা ৷
ওই শিবিরের আহ্বায়ক অনিলকুমার সাহা বলেন, “আমরা গত 11 ফেব্রুয়ারি পাকুয়াহাটে ওই শিবিরের আয়োজন করেছিলাম ৷ বিভিন্ন স্কুলের 116 জন পড়ুয়া থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা দিয়েছিল ৷ সম্প্রতি সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে ৷ দেখা যাচ্ছে, 116 জনের মধ্যে 17 জন ইতিমধ্যেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ৷ 33 জন ওই রোগের বাহক ৷ তিন বছর আগেও আমরা পাকুয়াহাটে এমন শিবিরের আয়োজন করেছিলাম ৷ সেবার 100 জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৷ তার মধ্যে 54 জনকে থ্যালাসেমিয়া বাহক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল ৷"
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, বামনগোলার মতো ছোট একটি ব্লকে থ্যালাসেমিয়ার এই ছবি যথেষ্টই উদ্বেগের ৷ বর্তমানে এই রাজ্যে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের হার 10 থেকে 12 শতাংশ ৷ সেই হিসাবে এখানে এই রোগের আক্রমণ অনেক বেশি ৷ থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে ৷ কারণ, এই এলাকায় থ্যালাসেমিয়া রোগ কিংবা বাহক নির্ণয়ের জন্য সেভাবে শিবির করা হচ্ছে না ৷ এই রোগ নিয়ে মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে ৷ মানুষের সচেতনতা বাড়াতেও জেলা প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে ৷ এই রোগ নিয়ন্ত্রণে বিয়ের আগে সবার থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা প্রয়োজন ৷
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে শহরে জমজমাট আঁকার প্রতিযোগিতা
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পাপড়ি নায়েকও ৷ তিনি জানান, বামনগোলা ব্লকের কিছু এলাকায় জিনগত প্রভাবে থ্যালাসেমিয়ার উপস্থিতি রয়েছে ৷ বেশিরভাগ মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি ভীষণ কম ৷ বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে সেটা বেশি করে ৷ এক্ষেত্রে কোন সংস্থা থ্যালাসেমিয়া চিহ্নিতকরণ শিবিরের আয়োজন করেছিল, তা জানা নেই ৷ সংস্থাটি কোথায় রক্তের নমুনা পরীক্ষা করিয়েছে সেটাও অজানা ৷ বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে ৷ ঘটনাটি সত্যি হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে ৷ তবে থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসা ছাড়া কোনও গতি নেই ৷