কলকাতা, 4 মে : মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপালের পালটা চিঠি । ফের একগুচ্ছ অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকড় । তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যে পুলিশ রাজ চলছে । সোশাল মিডিয়ায় কেউ কোনও মতামত দিলেই তার বাড়িতে পুলিশ পৌঁছে যাচ্ছে । সেটা রাজনৈতিক কারণেই । এ ছাড়াও চারপাতার চিঠিতে একগুচ্ছ অভিযোগ এনেছেন রাজ্যপাল ।
গত শনিবার মুখ্যমন্ত্রী 13 পাতার জবাবি চিঠি দেন রাজ্যপালকে । রাজ্যপালের লেখা কুড়িটি অভিযোগ উদ্ধৃত করে চিঠির জবাব দেন মমতা । মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “ যে ধরনের শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে তা ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকে কোনও নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে কোনও রাজ্যপাল দেননি । আমি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছি, দেশের সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক ইতিহাসে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে, রাজ্যপাল এমন চিঠি দিয়েছেন বলে একটি প্রমাণ দেখান । আমি আপনার ওই চিঠি এবং এর আগে চিঠিগুলি পেয়ে রেগে যাইনি । বরং দুঃখ পেয়েছি ।"
তারই উত্তর দিলেন রাজ্যপাল । চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, রাজ্যের মানুষ অনেক কষ্টে রয়েছেন । সেটা প্রমাণ করছে রেশন নিয়ে হিংসার ঘটনা । সেই ঘটনাকে উল্লেখ করে বলেছেন, এটা রাজ্য সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা । পাশাপাশি রাজ্যপাল লিখেছেন, “ আপনি বিরোধী দলগুলোকে শকুনের সঙ্গে তুলনা করেছেন । এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। একইসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কোন মতামত দিলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাদের দরজায় গিয়ে ধাক্কা দিচ্ছে । এভাবে আপনি রাজনৈতিক মতামতকে আটকে দেবার চেষ্টা করছেন । রাজ্যে পুলিশ রাজ চলছে । একই কাজ করছেন আপনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও ।" রাজ্যপাল লিখেছেন, “ আপনার চিঠির 8 নম্বর অনুচ্ছেদে রাজভবনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে বলেছেন । আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি, এই মুহূর্তে যিনি রাজ্যপাল আছেন তিনি বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল । তিনি সংবিধান সব সময় মেনে চলেন ।" তার অভিযোগ এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে । রেশন নিয়ে চূড়ান্তভাবে রাজনীতি হচ্ছে । এই বিষয়টি নিয়ে আমি বারবার বলছি । রেশন নিয়ে দুর্নীতি বন্ধ হোক ।"
বিতর্ক যে এখনই থামবে না তার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যপাল । রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে তাঁর মন্তব্য, “ এখন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেখানো পথে হাঁটার সময় এসেছে । চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির ।"