কলকাতা, 14 নভেম্বর : ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে -র এবারের থিম দা ফ্যামিলি অ্যান্ড ডায়াবেটিস । তবে, শুধুমাত্র থিম নয় । তা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা । ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রোগীর পরিবারের সকলকে আরও সচেতন করে তোলার পাশাপাশি রোগীকে তাঁদের সহায়তার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে ।
এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেবাশিস বসু বলেন, "ডায়াবেটিস পারিবারিক ব্যাধি, সামাজিক ব্যাধি । পরিবারের সকলকে ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে হবে । ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এমন খাবার করা হল, যা পরিবারের অন্য সকলের পক্ষেও ভালো । এই ভালো বিষয়টি যদি আমরা সকলে বুঝতে পারি, তাহলে ডায়াবেটিসের কষ্ট কমানো যাবে । এমনিতেই ডায়াবেটিস রোগীরা নানা আতঙ্কে থাকেন । তার উপর তাঁর সামনে পরিবারের অন্য সদস্যরা এমন কিছু খাবার খাচ্ছেন যা রোগীকে কষ্ট দেয় । পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতে পারেন তিনি ।"
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য বলছে, ছোটোদের ক্ষেত্রে 10 জনের মধ্যে আটজনের মা-বাবা জানতেই পারেন না যে, বিপদের সম্ভাবনাগুলি কী রকম? যে অভিভাবকরা জানেন, দেখা গেছে তাঁদের তিনজনের মধ্যে একজন ঠিকমতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি । ততক্ষণে হয়তো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুকে হাসপাতালে ভরতি করাতে হয়েছে । এইসব বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের, স্কুলের শিক্ষকদের জানানোর প্রয়োজন রয়েছে । চিকিৎসক দেবাশিস বসু বলেন, "এই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের স্টাডি হয়েছে । একটি স্টাডিতে দেখানো হয়েছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে সমস্যা, বোঝা হিসাবে মনে করা হচ্ছে । এর ফলে আক্রান্তদের প্রতি পরিবারের অন্য সদস্যদের সহানুভূতি সেভাবে দেখা যায়নি । ডায়াবেটিস চিকিৎসায় খরচের বিষয়টিও রয়েছে । আমাদের মতো দেশে একজন মানুষ যতটা রোজগার করেন, তার অর্ধেকের বেশি খরচ হয়ে যায় ।"
ডায়াবেটিস রোগীদের পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরা থাকবেন । ফলে, রোগীর পক্ষে যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে । এই বিষয়ে চিকিৎসক বলেন, "হ্যাঁ, নিশ্চয় । চিকিৎসকরা যেভাবে পরামর্শ দেন অর্থাৎ মেপে খাওয়া, সময়ে খাওয়া, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, সেই পরামর্শ যদি পরিবারের অন্য সদস্যরাও মোটামুটি মেনে চলেন তাহলে অন্যদের তুলনায় ভালো থাকবেন তাঁরা । অনেক বেশি সচেতনভাবে জীবনযাপন করবেন ।"
ডায়াবেটিস থেকে কীভাবে দূরে থাকা সম্ভব? চিকিৎসক বলেন, "স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা, টেনশন ফ্রি থাকতে পজিটিভ ভাবনাচিন্তা ধূমপান-অ্যালকোহল থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে । পরিমিত ঘুম জরুরি । পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে । 25 বছর বয়স হলেই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন । কারণ, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে 90-95 শতাংশ টাইপ টু । বাকি 5-10 শতাংশ টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস । আমাদের দেশে এখন টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের সংখ্যা বাড়ছে ।"