কলকাতা, 26 অক্টোবর : রাজ্য সরকারের স্কুল খোলার ঘোষণাকে 'বিলম্বিত বোধোদয়' বলে উল্লেখ করলেন ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের (Students' Federation of India- SFI) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য । এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন তিনি ৷ বললেন, "ঘোড়া চুরি হয়ে যাওয়ার পর আস্তাবলের দিকে নজর পড়েছে ৷" কারণ ইতিমধ্যে বিরাট সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় ৷ তাই তাদের কাছে এই সিদ্ধান্ত স্বাগত জানানোর জায়গায় নেই ৷ যুব নেতার দাবি, "সামাজিক ভাবে একটা জনমত তৈরি হচ্ছিল ৷ তাই স্কুল, কলেজ খোলা ছাড়া সরকারের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না ৷"
আগামী 16 নভেম্বর রাজ্যজুড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার ৷ সোমবার দীনেশ মজুমদার ভবনে ডাকা একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সৃজন জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গন খোলার দাবিতে সরব হয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা সেই আন্দোলনের আংশিক সাফল্যের প্রকাশ বলে দাবি করেন এসএফআই নেতা ।
মুখ্যমন্ত্রী স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব (Chief Secretary) হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে (Hari Krishna Dwivedi) নির্দেশ দিয়েছেন । কিন্তু যতক্ষণ না এবিষয়ে রাজ্য সরকার নিজে কোনও নির্দেশিকা জারি করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সৃজন ৷ এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এর আগে একাধিকবার মুখ্য়মন্ত্রী স্কুল খোলার ভাবনা প্রকাশ করলেও শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন কবে খুলব জানি না ৷"
স্কুল খোলার পক্ষে যে জনমত তৈরি হয়েছিল, তাতে স্কুল, কলেজ খোলা ছাড়া সরকারের কাছে উপায় ছিল না, জানালেন এসএফআই সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : 15 নয়, 16 নভেম্বর থেকে রাজ্যে খুলবে স্কুল-কলেজ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
তবে করোনাকালে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার পর বেশ কিছু বিষয়ে নতুন করে নজর দেওয়ার কথা তুলে ধরেন সৃজন ৷ তিনি জানান, মিড ডে মিল-এর পুরো প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক করা থেকে শুরু করে পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণ করতে হবে ৷ সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন তিনি ৷ সৃজন বলেন, "সিলেবাস রিওরিয়েনটেশন করতে হবে ৷ শিক্ষাবর্ষে কোনও পরিবর্তন করা যায় কি না, সেটাও দেখতে হবে ৷ কারণ গত দেড় বছর ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ অনলাইন ক্লাস করতে পারেনি ৷ তারা ওই বিষয়গুলি পড়েনি ৷" এক্ষেত্রে যারা অনলাইন ক্লাস করতে পেরেছে, তাদের সঙ্গে এদের দেড় বছরের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে ৷ এদের কী ভাবে ফের লেখাপড়ার মধ্যে পুরোপুরি যুক্ত করা যায়, সেটা দেখা জরুরি ৷
এছাড়া, করোনাকালে বহু পড়ুয়া পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে ৷ এই বিশেষ দিকটি উল্লেখ করে সৃজন বলেন, "লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে ড্রপআউট হয়েছে ৷ বিশেষত ছাত্রীরা, অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্রছাত্রী, এসসি, এসটি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কী ভাবে ফেরানো যাবে, সে বিষয়টিকে সরকারের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ৷" এর সমাধানে তিনি দাবি করেন, "শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সব অংশীদারি সংস্থা, প্রতিনিধি, সংস্থা, বিশেষত ছাত্র সংগঠনগুলির সঙ্গে সরকার অবিলম্বে কথা বলতে বসুক ৷"