কলকাতা, 18 নভেম্বর: বর্তমানে কলকাতা পুলিশের অধীনস্থ গোয়েন্দা বিভাগ শহরে অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে । কিন্তু কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এই সাফল্যের যাত্রাপথ এতটা সহজ ছিল না (Lalbazar Detective Department)। বর্তমান কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police Headquarters Lalbazar) গোয়েন্দা বিভাগ 1868 সালে 28 নভেম্বর গোটা দেশকে শিখিয়েছিল যে কীভাবে অপরাধের ঘটনায় গোয়েন্দাগিরি করতে হয় । আর সেই গোয়েন্দাগিরির উত্থানে যে ব্যক্তির সব থেকে বেশি কৃতিত্ব, তিনি হলেন কলকাতা পুলিশের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বা নগরপাল স্যার স্টুয়ার্ট সৌনডার্স হগ (Sir Stuart Saunders Hogg)। তাঁর নেতৃত্বে কাজ করেছিলেন, রিচার্ড রিড (Richard Reid) এবং ইন্সপেক্টর আর ল্যাম্ব (R Lamb), শ্রীনাথ পাল এবং কালীনাথ বোসের মতো তৎকালীন তাক লাগিয়ে দেওয়া গোয়েন্দারা (First detective department of India)।
গোটা ঘটনার সূত্রপাত 1868 সালের 1এপ্রিলে ৷ উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায় রোজ ব্রাউন নামে একজন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলার রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটে । পরে জানা যায়, কয়েকজন আততায়ী একত্রিত হয়ে ওই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলাকে নৃশংস ভাবে খুন করে । 18 শতকে কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন ছোট বড় সংবাদমাধ্যমে কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলার হত্যার ঘটনা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে । তৎকালীন লালবাজারের নির্দেশে তড়িঘড়ি গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে তৎকালীন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ । কিন্তু বেশ কয়েক দিন কেটে যাওয়ার পরেও আততায়ীদের কোনও রকমের ক্লু বা লিংক খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন সংশ্লিষ্ট থানার তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
রাজধানীর বুকে ঘটে যাওয়া অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মহিলার খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচনে অপারগ তৎকালীন কলকাতা পুলিশ - এই অভিযোগে দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন নামী সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় ৷ এর পরেই তৎকালীন কলকাতা পুলিশ কমিশনার স্যার স্টুয়ার্ট সৌনডার্স হগ নিজে তদন্তের রাশ টেনে ধরেন । স্বয়ং তিনি তদন্তে নেমে বেশ কিছু সত্যতার সম্মুখীন হন । তিনি দেখেন যে, এ ধরনের ঘটনার তদন্তে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হল, শহরের বুকে এই প্রকারের কোনও ভয়াবহ হত্যার ঘটনা বা বড়সড় অপরাধের কিনারা করতে হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিককে কোন কোন দিকে খেয়াল রাখতে হয় এবং সঠিক কোন কোন সূত্রের উপর অবলম্বন করে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তার কোনও প্রশিক্ষণ নেই পুলিশ কর্মীদের ।