ডেঙ্গি টেস্ট করানো প্রয়োজন বলছেন চিকিৎসক কলকাতা, 27 জুলাই:বর্ষাকাল মানেই বহু রোগের আঁতুড়ঘর। বৃষ্টির জমা জল থেকে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ। তবে এর মধ্যে অন্যতম হল মশাবাহিত রোগ। বর্ষাকালে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ সবথেকে বেশি। প্রতিবছর এই সময় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। চলতি মরশুমে ইতিমধ্যেই শহর কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে 11 জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জেলাতেও হু-হু করে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। শুধু ডেঙ্গি নয় এবছর বর্ষায় চোখ রাঙাচ্ছে কনজাংটিভাইটিস যা জয়বাংলা নামে পরিচিত। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যদি জ্বর তিন দিনের বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই ডেঙ্গি টেস্ট করানো প্রয়োজন।
মূলত জয়বাংলা অথবা কনজাংটিভাইটিস রোগটি অ্যাডিনো ভাইরাসেরই একটি প্রকার বলেই জানান চিকিৎসক সায়ন চক্রবর্তী। তিনি জানান যে, সমস্ত শিশুর একবার অ্যাডিনো ভাইরাস হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যদি আবার কনজাংটিভাইটিস হয় তাহলে নতুন করে কোনও সমস্যা হবে না। তবে যদি কারও ডেঙ্গি দু'বার হয় তাহলে পরবর্তীকালে তার বড় কোনও রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডেঙ্গি হলে সবথেকে বেশি দরকার জল খাওয়া। যে সমস্ত মানুষ মারা গিয়েছে দেখা যাবে তাদের সকলেরই জলের সমস্যা রয়েছে। তবে পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতরের নতুন যে পরিকল্পনা ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য তাকেও স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গি নিয়ে স্বাস্থ্যভবনে বৈঠকের পর হাসপাতালগুলিতে ফিভার ক্লিনিক চালুর নির্দেশ
তবে এবছর ডেঙ্গি বা কনজাংটিভাইটিস সব থেকে বেশি আঘাত করছে শিশুদেরকে। তার কোনও বিশেষ কারণ রয়েছে? এ বিষয়ে চিকিৎসক জানান, যেহেতু স্কুল খোলা তাই ছড়িয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। যদি কোনও শিশু কনজাংটিভাইটিসে ভোগে তাহলে তার ব্যবহার করা জিনিসপত্র অন্য কোনও শিশুর সংস্পর্শে এলে সেখান থেকে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। মূলত ডেঙ্গির মশা কামড়ায় সকালবেলায় ৷ অন্যদিকে আবার শিশুদের স্কুলও চলে সকালবেলাতেই। ফলে যদি কোনও সময় মশা কামড়ায় তাহলে একটা ভয় থেকে যায়। তাই মশা যাতে না-কামড়ায় সে ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে।একইসঙ্গেযদি কোনও বাচ্চার জ্বর বা কনজাংটিভাইটিস হয় তাহলে তাকে স্কুলে না-পাঠানোর নির্দেশ চিকিৎসকের।
তবে শুধু কলকাতা নয়, ডেঙ্গিতে জর্জরিত বাংলাদেশও। সেখানে ইতিমধ্যেই প্রায় শ'য়ে শ'য়ে মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তাই কলকাতা পৌরনিগমের তরফে বাংলাদেশ থেকে ডেঙ্গির জীবাণু নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে কেউ আসছে কি না, তার উপর নজরদারি করার জন্য বিমানবন্দরে রক্ত পরীক্ষার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসকের মতে, এতে কোনও বাড়তি সুবিধা নেই। তার কারণ ডেঙ্গি কোভিডের মতো নয়। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত কোনও রোগী যদি অন্য কারও সংস্পর্শে আসে তাহলে সেখান থেকে ছড়ানো সম্ভাবনা থাকে না, যদি না ওই মশা তাঁকে কামড়ায়।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গি নিয়ে কড়া পৌরনিগম, তিন কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করবেন ফিরহাদরা