কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে ধর্নার আর্জিতে সন্মতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে চার দিনের পরিবর্তে তিনদিন করা যাবে এই কর্মসূচি। শর্ত সাপেক্ষে 22 থেকে 24 ডিসেম্বর নবান্ন বাস স্ট্যান্ডে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্নায় অনুমতি দিল হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, 300 জনের বেশি একসঙ্গে ওই ধর্না মঞ্চে থাকতে পারবেন না। বকেয়া ডিএ-সহ এক গুচ্ছ দাবিতে সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চ ধর্নায় বসতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ৷ পুলিশ অনুমতি না দেওয়ার জেরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা শুক্রবার মঞ্চকে ধর্নায় বসার সেই অনুমতি দিয়েছেন।
মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতি বলেন, "রেড রোডে র্যালি হচ্ছে, আপনারা 144 ধারার মধ্যে রাজভবনের সামনে ধর্নার অনুমতি দিলে নবান্ন বাসস্ট্যান্ডে কেন নয় !" মামলাকারিরা বলেন, "রাজভবনের সামনে 144 ধারা থাকা সত্ত্বেও ধর্নায় অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ।" যদিও রাজ্যের বক্তব্য, "এই ভাবে ধর্না দিয়ে কোনও কাজের কাজ কিছু হয় না।" এরপরই বিচারপতির পালটা বক্তব্য, "কে বলেছে হয় না ! স্কুলে নিয়োগ নিয়ে ছেলে-মেয়েরা ধর্নায় বসে আছে বলেই সরকারের প্রতিনিধি গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করেছে। আলাপ আলোচনা হয়েছে।"
উল্লেখ্য, সংগ্রামী যৌথমঞ্চের সভার জন্য নবান্ন বাস স্ট্যাণ্ডে 19 থেকে 22 ডিসেম্বর সভা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল তারা। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ছিল, বকেয়া ডিএ-সহ একাধিক দাবি আদায়ে হাওড়া পুলিশকে আবেদন করা হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। কিন্তু পুলিশ হ্যাঁ বা না কিছু না বলে ঝুলিয়ে রেখেছে। সরকারি কর্মচারীরা বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে গেলেও রাজ্য সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন, মহার্ঘভাতা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আইনসঙ্গত নয়।
কর্মচারীরা মহার্ঘভাতার দাবি জানাতে পারে না। এমনকী এটা দয়ার দান বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার সাধ্যমতো মহার্ঘভাতা দিয়েছে। রাজ্যের কোষাগারে পর্যাপ্ত অর্থ নেই কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা দেওয়ার। অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট একাধিক বার রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা দিতে হবে। কারণ এটা তাদের অধিকার। একজন সরকারি কর্মচারী যাতে সম্মানের সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে তার জন্য আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বছর তাদের মহার্ঘভাতা প্রাপ্য।