সিঙ্গুর, 12 মার্চ : তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর পরই টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছেন একাধিক নেতা-নেত্রী ৷ সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকেও বয়সের দোহাই দেখিয়ে টিকিট দেওয়া হয়নি ৷ ক্ষোভে-দুঃখে তিনি সরাসরি পদ্মশিবিরে নাম লিখিয়েছেন ৷ মাস্টারমশাইয়ের জায়গা নিয়েছেন বেচারাম মান্না ৷ যার ঘনিষ্ঠ তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক ৷ কিন্তু কিছুদিন ধরেই তিনি খানিক বেসুরো ৷ তৃণমূলের কোনও প্রচারে থাকবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি ৷ প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে ৷ তাহলে কি নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ পাল্টাতে চলেছেন তিনি ? আর এই জল্পনাকেই উস্কে দিয়েছে বুধবারের ঘটনা ৷ প্রচারে বেরিয়েছিলেন সিঙ্গুরের বামপ্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য ৷ মনোরঞ্জনের দোকানে গিয়ে দেখাও করেন তিনি ৷ দুহাত তুলে তাঁকে আশীর্বাদও করেন তাপসী মালিকের বাবা ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় রাজনৈতিক সমীকরণ কিছুটা হলেও বদলাবে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের ৷
সালটা 2006 ৷ সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে সরগরম রাজ্যরাজনীতি ৷ তারই মাঝে আগুনের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তাপসী মালিককে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ৷ অভিযোগ ওঠে বাম সরকারের বিরূদ্ধে ৷ আর এই ঘটনাই রাজ্যের মসনদে বসার গতি পাইয়ে দিয়েছিল তৃণমূলকে ৷ তারপর থেকে তৃণমূলের হয়ে বিভিন্ন প্রচার, রাজনৈতিক সভা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যেত মনোরঞ্জন মালিক ও ওনার স্ত্রীকে ৷ কিন্তু হঠাৎ তাঁর এই দলের প্রতি মুখ ঘুরিয়ে থাকাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা রাজনৈতিক মহল ৷
যদিও মনোরঞ্জন নিজেকে দর্শক হিসাবেই দাবি করে বললেন, " আমি এখন দর্শক ৷ মাঠের মধ্যে খেলা দেখছি ৷ কে কখন গোল দেবে তা বলা মুশকিল ৷ " যদিও তিনি এখনও দল থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেননি বলেই জানিয়েছেন ৷ প্রচারে না যাওয়ার কারণ হিসাবে তাঁর সাফ জবাব " দল আমাকে এখনও ডাকেনি ৷ তাই যাবনা ৷ দিদি ডাকলে তখন দেখা যাবে ৷ দলকে আমি ভালোবাসি ৷ দিদিকে ভালোবাসি ৷ " সৃজন ভট্টাচার্যকে আশীর্বাদ করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, " আমার ঘরে যদি কোনও শত্রুও আসে তাহলেও আমি তাকে স্বাগত জানাবো ৷ এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি ৷ "