হুগলি, 28 মে : কোরোনা সংক্রমণের জন্য পরিযায়ী শ্রমিকের দোষ দিয়ে লাভ নেই। রাজ্য সরকার যথাযথ পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি । আজ হুগলিতে এসে রাজ্য় সরকারকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন BJP সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ।
আমফানে হুগলির সুকান্ত নগরের সঞ্জীব পোদ্দার ও ডানলপ জাপপুকুরের বাসিন্দা পশুরাম যাদবের মৃত্য়ু হয়েছে । আজ তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্য়ায় । সঙ্গে ছিলেন সায়ন্তন বসুও। সেখানেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য়ের অব্যবস্থা, আমফানে কেন্দ্রের সাহায্য সহ একাধিক ইশুতে রাজ্য় সরকারকে কটাক্ষ করেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায় । তিনি বলেন, "নানা রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন। তাঁদের কোনওভাবেই আটকানো সম্ভব নয়। হুগলির কোনও বাসিন্দা মহারাষ্ট্র বা অন্য রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরতে চাইলে, তাঁদের আমরা আটকাতে পারি না । পরিযায়ী শ্রমিকদের দায়িত্ব যখন প্রত্যেকটা রাজ্যের সরকার নিয়েছে । পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকেও নিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার বানাতে হবে। সে জায়গায় যদি বলা হয় শ্রমিকদের রাখার কোনও জায়গা নেই। তাহলে বলতে হয় পশ্চিমবঙ্গের পরিকাঠামোই ব্যর্থ ।
তিনি আরও বলেন, "পরিযায়ী শ্রমিকরাতো আর কোরোনা ছড়ায়নি। কোরোনা বিদেশ থেকে এসেছিল। সে জায়গায় গরিব পরিযায়ী শ্রমিকদের দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই। তাঁদের বাড়ির আসার ব্যবস্থা করতে হবে । সুন্দরভাবে পরিকাঠামো তৈরি করে স্কুল ও কলেজ যেখানে যেভাবে ব্যবস্থা করা সম্ভব, সেখানে কোয়ারানটিনে রাখতে হবে । এই পরিস্থিতিতে মানুষের কথা না ভেবে যদি নিজের কথা ভাবা যাবে না । ভোটের রাজনীতির কথা ভাবলেই মানুষ বিপদে পড়বে।"
আমফান মোকাবিলায় রাজ্য়ের জন্য 1000 কোটির সাহায্যের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী । এবিষয়ে, BJP সাংসদ বলেন, "রাজ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী হাজার কোটি টাকার সাহায্য় ঘোষণা করেছেন । আমরা চাই, সেই টাকা যেন সঠিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের কাছে পৌঁছায় । সেই ব্যবস্থাই করা উচিত রাজ্য সরকারের। আমফানে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাড়ি-ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গরিব ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ টাকা, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যদি না পায়, তাহলে আমাদের কর্মীরা আছে। গরিব মানুষের হয়ে লড়াই করে সেই টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।"
পৌরসভাগুলিতে প্রশাসক বসানো নিয়েও রাজ্য় সরকারকে আক্রমণ করেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায় । তিনি বলেন, "দেশে সব জায়গায় একই নিয়ম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে অন্য নিয়ম । কলকাতা পৌরনিগমে মেয়র ফিরাদ হাকিমকেই আবার প্রশাসকের জায়গায় বসানো হয়েছে। প্রতিটি পৌরসভাতে প্রশাসকের নামে তৃণমূলের নেতাদের বসানো হচ্ছে । এটা ঠিক নয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না । পুরোপুরি রাজনীতি আর নিজেদের জায়গাটা ধরে রাখার জন্যই এইসব করা হচ্ছে । টাকা-পয়সা মানুষের হাতে না গিয়ে, যাতে নেতা-মন্ত্রীদের পকেটে যায়, সেজন্যই এসব করা হচ্ছে ।"