সিঙ্গুর, 21 এপ্রিল: করোনায় মৃত্যু হওয়ার পর 17 ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন ৷ ব্যবস্থা করা তো দূরের কথা, মৃতের পরিবারের তরফে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি সরকারি কর্মীদের ৷ অভিযোগ, মৃতের বাড়ির লোকজন বারবার প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ ভোট মিটে গেছে তাই প্রশাসনের টিকিও দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার অভিযোগও উঠেছে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম ভোলনাথ পাল (66) । ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির সিঙ্গুরে বাঁকিপুর গ্ৰামে । গত 17 এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন তিনি ৷ গতকাল রাত 10টায় শ্বাসকষ্টের জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসে । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখা যায় মারা যান ভোলানাথবাবু । হাসপাতালে আর না গিয়ে তাঁকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বাড়ি ফিরে আসে ৷ বাড়ির উঠানেই দেহ রেখে দিয়ে চলে যায় তারা । মৃতের বাড়ির লোকজন প্রশাসনকে খবর দেন ৷ রাত থেকেই প্রশাসনের লোকজন যাচ্ছি যাচ্ছি বলে চলেন ৷ কিন্তু বুধবার সকাল পর্যন্ত তাদের দেখা পাওয় যায়নি ৷
মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সতেরো ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও মৃতদেহ তুলে নিয়ে যায়নি প্রশাসন । এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায় ৷ তাঁর ছেলে বলেন, "মাত্র দু'দিন আগেই বাবার কোভিড ধরা পড়ে ৷ আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল ৷ কাল রাত দশটা নাগাদ বাবার মৃত্যু হয় ৷ তার আগে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলাম ৷ কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছিলাম না ৷ তারপর যখন পেলাম ততক্ষণে বাবার মৃত্যু হয়েছে ৷ ডেথ সার্টিফিকেট বের করতে সময় লাগছে ৷ প্রশাসনকে জানিয়েছি ৷ তাও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ৷ "
বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দায় এড়িয়ে যায় তারা ৷ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছে, গোটা হুগলি জেলায় মোট 17টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে ৷ সবক'টিই কোভিড রোগীদের জন্য কাজ করছে ৷ তাই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে না এমনটা হতে পারে না ৷ আর বাড়িতে মৃতদেহ পড়ে থাকা নিয়ে সাফাই, বিষয়টি তাদের জানা ছিল না ৷ এখন জানার পর তারা দ্রুত পদক্ষেপ করবে ৷
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় রোগীমৃত্যুর অভিযোগ