চন্দননগর, 22 নভেম্বর: নাম সৃজন আর কাজেও 'সৃজন' ৷ বয়স সাত হলে কী হবে, ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধ প্রভাব ফেলেছে ওর মনেও ৷ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ ও কয়েকহাজার শিশু । বোমা বর্ষণের জেরে হাসপাতাল ভেঙে পড়ায় চরম আর্তনাদ শিশু-সহ সাধারণ মানুষের মনে। যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট হয়েছে গিয়েছে । তার ফলে অসুস্থ ও আহত শিশুদের শৈশব আজ বিপন্ন। সেই আর্তনাদ ও হাহাকারের ছবি রং-তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৃজন পোদ্দার ।
ছোট্ট সৃজনের বাড়ি ভদ্রেশ্বরে। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে আঁকতে ভালোবাসে সে । বাবাও একজন চিত্রশিল্পী ।তার হাত ধরেই 9 মাস থেকে কাগজে আঁকিবুঁকি টানা শুরু সৃজনের । বর্তমানে সে অ্যাবস্ট্রাক্ট অর্থাৎ বাস্তব পরিস্থিতিকে রং-তুলির মাধ্য়মে ফুটিয়ে তোলে । অ্যাক্রেলিক রং দিয়ে টাইলসের উপর ছবিও আঁকছে । এখনও পর্যন্ত তাঁর আঁকা ছবির সংখ্যা 10 হাজার । এর মধ্যে অধিকাংশই রঙিন অ্যাবস্ট্রাক্ট ছবি । পরিবারের সঙ্গে টিভি ও সামাজিক মাধ্যমে যুদ্ধের শিশুদের বিধ্বস্ত অবস্থার কথা জানতে পারে সৃজন । সেগুলোই তার মনে দাগ কেটে যায় । তারপরই যুদ্ধ বিধ্বস্ত শিশুদের নিয়ে ছবি আঁকা শুরু করে ।
সিঙ্গল লাইনের জল রং দিয়ে এই নিয়ে সাতটি ছবি এঁকে ফেলেছে সৃজন । সেইসব ছবিতে উঠে এসেছে চিকিৎসাধীন শিশুদের ছবি, রাস্তায় বাস্তুহারা শিশু ও কোনওটায় শুধুই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আহত শিশুদের ছবি । আর এই ছবিগুলি জায়গা পেয়েছে চন্দননগরের দৈবকপাড়া সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপে । সকলেই চায় বিশ্বজনীন শান্তি। জগৎকে ধারণ করেন যিনি সেই জগদ্ধাত্রীর কাছে তাই বিশ্ব শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে পুজো উদ্যোক্তারা ।
সৃজনের বাবা সমরেশ পোদ্দারের আবেদনে সাড়া দিয়ে মণ্ডপের পাশে তার ছবির এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দেয় পুজো কমিটি । খুদে শিল্পীর এই চিন্তাভাবনাকে সকলেই স্বাগত জানিয়েছেন । বহু দর্শনার্থী পুজো মণ্ডপে এসে সৃজনের কাজ দেখে আপ্লুত হচ্ছেন ।