পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Dengue Mosquitoes: বদলেছে চরিত্র থেকে বাহক, শীতেও থাকবে ডেঙ্গি; বলছে গবেষণা

ডেঙ্গি মশার চরিত্রে বদল (Dengue Mosquitoes)! শীতেও থাকবে ডেঙ্গির প্রকোপ। বেড়েছে প্রতিরোধ ক্ষমতা। বদলেছে বাহক। গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের।

Dengue Mosquitoes
ডেঙ্গি মশার চরিত্রে বদল

By

Published : Nov 12, 2022, 9:23 PM IST

দার্জিলিং, 12 নভেম্বর: সারা রাজ্য বা দেশজুড়ে এখন ডেঙ্গি (Dengue) চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একপ্রকার বলতে গেলে ডেঙ্গিতে রাজ্যে মৃত্যু মিছিল এবং আক্রান্তের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। কোনওভাবেই ডেঙ্গিতে রাশ টানতে পারছে না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বা রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর (WB Health Department) । সম্প্রতি, ডেঙ্গি মশার আচমকা বাড়বাড়ন্ত হওয়ায় তাদের নিয়ে গবেষণার পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের হাতে। তা হল ডেঙ্গি মশার চরিত্রে বদল ঘটেছে, তাই শীতেও থাকবে ডেঙ্গি।

স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বারবার দাবি করা হচ্ছে, শীতকাল আসলেই ডেঙ্গি নির্মূল হয়ে যাবে। এমনকী খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও (Mamata Banerjee) ডেঙ্গি নিয়ে সেই দাবিই করেছেন। কিন্তু জাঁকিয়ে শীত পড়লেও নির্মূল হবে না ডেঙ্গি। এমনকী ডেঙ্গি মশার চরিত্রেও এসেছে পরিবর্তন। যে কারণে তাদের মধ্যে বেড়েছে কীটনাশকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা। আশ্চর্যের বিষয় মিউটেশনের ফলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মশা মারতে যে ফগিং বা স্প্রে করার পাশাপাশি বাড়িতে মশা তাড়াতে যে কয়েল বা তেলের ব্যবহার করা হয় সেইসবের কোনও প্রভাবই পড়ছে না মশার উপর। আবহাওয়ার কারণেই চরিত্রে বদল এসেছে মশার। যার ফলে চিন্তিত গবেষকরা।

শীতেও থাকবে ডেঙ্গি বলছে গবেষণা

আরও পড়ুন:ঠান্ডা পড়লে ডেঙ্গি কমে যাবে, এখন সাবধানে থাকুন; নদিয়ায় সতর্কবার্তা মমতার

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) জুওলজি বিভাগের অধ্যাপক (পতঙ্গ রোগ বিশেষজ্ঞ, বায়োকেমিস্ট্রি) ধীরাজ সাহা বলেন, "মশা ডেঙ্গি ভাইরাসের মূল বাহক। মূলত এডিস মশার মধ্যে 'এডিস ইজিপ্টাই' মশাই ডেঙ্গির মূল কারণ ছিল। এই মশা শহরাঞ্চলে বসবাস করত। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে বন বা জঙ্গলে বসবাসকারী এডিস এলবোপিকটাস মশা চরিত্র পরিবর্তন করে শহরে ঢুকছে ও ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে । পাশাপাশি চরিত্র পরিবর্তন হওয়ায় যেসব কীটনাশক, ফগিং, স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে মশা সেসব অনায়াসে হজম করে নিচ্ছে। তাদের উপর কোনও প্রভাব পড়ছে না। ফলে মশার প্রকোপ কমছে না।"

বিভাগের আরেক গবেষক মানস প্রতিম মোদক বলেন, "যে দাবি করা হচ্ছে শীতকালে ডেঙ্গি নির্মূল হবে তা নয়। মিউটেশনের ফলে মশার মধ্যে কিছু চারিত্রিক পরিবর্তন এসেছে। ফলে পাহাড় এলাকাতে ঠান্ডা পরিবেশেও তারা বেঁচে থাকছে যেটা হওয়ার কথা নয়। 10 ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও মশা অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে ৷"

গবেষণার পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের হাতে

আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যভবন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি প্রশিক্ষণ

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত রাজ্যে গ্রামীণ এলাকার তুলনায় শহরাঞ্চলে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। শহরাঞ্চলে ডেঙ্গির প্রকোপের মূল কারণই ছিল এডিস ইজিপ্টাই মশা। কিন্তু জঙ্গলে থাকা এডিস এলবোপিকটাস মশার হার খুবই কম ছিল। বলতে গেলে 100টি মশার নমুনা সংগ্রহ করলে তার মধ্যে দু'বছর আগেও 90টি ইজিপ্টাই মশা পাওয়া যেত। কিন্তু এই বছর দেখা যাচ্ছে ঠিক উলটো। এখন 100টির মশার নমুনার মধ্যে 70 থেকে 80টি মশাই এলবোপিকটাস মশা মিলছে । চরিত্র পরিবর্তন করে শহরে ঢুকে পড়ায় অন্যতম ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ।

পাশাপাশি ডেঙ্গির মশা 10 ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে 40 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু রাজ্যে বা শিলিগুড়িতে শীতকালের তাপমাত্রা 10 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে সেভাবে নামে না। ফলে শীতকালেও থাকবে ডেঙ্গির প্রকোপ তা একপ্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। পাহাড়ে অন্যান্যবারে সেভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ না-দেখা গেলেও এবারে পাহাড়ে প্রকোপ দেখা গিয়েছে। চরিত্র পরিবর্তন হওয়ায় এইবছর বেশি উচ্চতা অর্থাৎ পাহাড়েও যথেষ্ট ডেঙ্গি মশা মিলছে। যার ফলে চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতর।

আরও পড়ুন:চলতি বছরে রেকর্ড ডেঙ্গি সংক্রমণ, ভয় ধরাচ্ছে কলকাতার পরিসংখ্যান

ABOUT THE AUTHOR

...view details