দার্জিলিং ও কালিম্পং, 12 জুলাই: পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৷ 22 বছর পর দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে পঞ্চায়েত ভোট হল ৷ সম্পূর্ণ ফলাফলও ঘোষণায় জানা গিয়েছে, পাহাড়ের যে জায়গাগুলিতে একসময় ডিজিএইচসি অর্থাৎ দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের দাপট ছিল ৷ সেখান থেকে গ্রামপঞ্চায়েতের ক্ষমতা যায় জিএনএলএফের কাছে ৷ এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই সব জায়গাগুলিতে জয়ী হয়েছে অনিত থাপার দল ৷ উল্লেখ্য, ডিজিএইচসি-র জায়গায় এখন রয়েছে জিটিএ মানে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ৷
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং জেলার 70টি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে 38টি বিজিপিএম, 14টি নির্দল, বিজেপি তিন ও ত্রিশঙ্কু হয়েছে 15টি গ্রামপঞ্চায়েতে ৷ পাশাপাশি দার্জিলিং জেলার পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি, রঙলি রঙলিয়ত, বিজনবাড়ি- এই চারটি সমিতি পেয়েছে বিজিপিএম ৷ মিরিকের পঞ্চায়েত সমিতি ত্রিশঙ্কু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: চা বলয়ে আধিপত্য কায়েম তৃণমূলের, ধরাশায়ী বিজেপি
একইভাবে কালিম্পং জেলার 42টি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে 29টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজিপিএমের দখলে ৷ নির্দল পেয়েছে আটটি, বিজেপি দুটো এবং ত্রিশঙ্কু ফলাফল হয়েছে তিনটি গ্রামপঞ্চায়েত ৷ পাশাপাশি কালিম্পংয়ের চারটি পঞ্চায়েতসমিতির মধ্যে কালিম্পং ও লাভা পঞ্চায়েত সমিতি বিজিপিএমের দখলে ৷ বাকি দু'টি পঞ্চায়েত সমিতি গরুবাথান এবং পেডং নির্দল প্রার্থীদের দখলে গিয়েছে ৷
জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অনিত থাপা বলেন, "গণতান্ত্রিক মতে পাহাড়ে পঞ্চায়েত রাজ ফিরে এল ৷ বিরোধীরাও অনেক আসন পেয়েছে ৷ সবাই মিলে পাহাড়ের উন্নয়নের কাজ করা হবে ৷" দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, "পাহাড়বাসীকে ধন্যবাদ জানাই ৷ যা ফল হয়েছে, তা আমরা মাথাপেতে মেনে নিয়েছি ৷ প্রত্যেক গ্রামপঞ্চায়েতে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছে ৷ দুর্নীতিমুক্ত গ্রাম গড়তে আমরা বদ্ধপরিকর ৷"
আরও পড়ুন: গণনা ঘিরে একাধিক খুন দক্ষিণ 24 পরগনায়, উত্তপ্ত ভাঙড়-রায়দিঘি
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুশি পাহাড়বাসী ৷ গরুবাথানের বাসিন্দা রাজেশ লামা বলেন, "প্রত্যন্ত গ্রামগুলির উন্নয়নে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা না-থাকায় আমরা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছিলাম ৷ এখন পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ফিরে আসায় গ্রামে ঠিকমতো উন্নয়ন হবে ৷" কালিঝোরার বাসিন্দা সীমা ছেত্রী জানান, তাঁরা বহুদিন থেকে চাইছিলেন যাতে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ফিরে আসে ৷ ছোটখাটো কাজের জন্য আগে পাহাড়বাসীকে জেলাশাসকের দফতরে ছুটতে হত ৷ এখন সেই অসুবিধে রইল না ৷